আজ ২৫ সেপ্টেম্বর। বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস। ইন্টারন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশন (এফআইপি) কাউন্সিল ২০০৯ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রতিবছর ২৫ সেপ্টেম্বরে ‘বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস’ পালনের ঘোষণা দেয়। উদ্দেশ্য, এই পেশায় কর্মরত ব্যক্তিরা বিশ্বময় স্বাস্থ্যসেবায় যে বহুমাত্রিক অবদান রেখে আসছে তার প্রতি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করা।
এই দিনটিকে বেছে নেওয়ার কারণ ছিল, ১৯১২ সালে এই দিনে বিশ্বের সব দেশের ফার্মাসিস্ট ও ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্টিস্টদের বৈশ্বিক সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশন (এফআইপি) নেদারল্যান্ডসের হেগে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু করে।
ইন্টারন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশনের আহ্বানে ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর সারা বিশ্বে ফার্মেসি পেশাজীবীরা জনসাধারণকে স্বাস্থ্যসেবায় এই পেশার অবদান সম্পর্কে সচেতন করতে সভা-সেমিনার, শোভাযাত্রা, রক্তদান কর্মসূচিসহ নানা বর্ণাঢ্য আয়োজন ও স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এ দিনটি পালন করে আসছে। প্রতিবছর এফআইপি এই দিবস উপলক্ষে এক একটি থিম বা প্রতিপাদ্য ঘোষণা করে। এই ধারাবাহিকতায় এবারকার প্রতিপাদ্য ঘোষিত হয়েছে : ‘ Pharmacists: Meeting global health needs’ (‘ফার্মাসিস্ট : বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য চাহিদা মেটাচ্ছেন’)।
বর্তমানে ১৩টি সরকারি ও ৩০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে চার থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি ফার্মেসি শিক্ষা চালু রয়েছে, যারা গ্র্যাজুয়েট তথা ‘এ’ ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্ট তৈরি করছে। এ ছাড়া ১৭টি সরকারি ও ৪১টি বেসরকারি ইনস্টিটিউট চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদানের মাধ্যমে ‘বি’ ক্যাটাগরির ফার্মাসিস্ট তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। উপরন্তু বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল ও বাংলাদেশ কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতি যৌথভাবে ওষুধ ব্যবসায়ে আগ্রহী ব্যক্তিদের জন্য একটি ত্রৈমাসিক ফার্মেসি সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন কোর্স পরিচালনা করে আসছে।
বিশ্বময় স্বাস্থ্যসেবার বিভিন্ন আঙ্গিকে ফার্মাসিস্টরা এক অতুলনীয় ভূমিকা রেখে আসছেন। আপনি যদি ছোট্ট করে বলতে চান, তাহলে বলতে পারেন, ফার্মেসি কারিকুলামের উদ্দেশ্য—ওষুধের বিভিন্ন দিক ও আঙ্গিকের ওপর দক্ষ এবং বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের জনবল তৈরি করা। এই উদ্দেশ্যে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চার বছর মেয়াদি ব্যাচেলর কিংবা পাঁচ বছর মেয়াদি ফার্ম.ডি. (ডক্টর অব ফার্মেসি) কোর্স অফার করে আসছে। এই দীর্ঘ পরিক্রমায় ফার্মেসির একজন ছাত্রকে ওষুধের ব্যবহার ও ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বিষয়ে ব্যাপক প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি ওষুধের মূল ও সহায়ক উপাদান আহরণ/সংশ্লেষণ, বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয়ে ট্যাবলেট/ক্যাপসুল ইত্যাদি প্রডাক্ট তৈরি, মান নিয়ন্ত্রণ, সংরক্ষণ, বিপণন, বিতরণ, ওষুধ ব্যবহারকালে রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণসহ ওষুধ সম্পর্কিত সব দিক ও আঙ্গিকের ওপর দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়।