অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, হাওরের উপজেলার সাথে একদিকে কিশোরগঞ্জ জেলার সাথে সংযোগ আরেক দিকে সিলেটের সাথে সংযোগ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখব। এখন থেকে অন্তবর্তীকালীন সরকার ঢাকায় বসে কোন পরিকল্পনা করবে না। মানুষের সাথে কথা বলে মানুষ যেটা চায়, মানুষ যেটা প্রয়োজনবোধ আমরা সেটাই করব।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা পরিষদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা স্পষ্ট করতে চাই, আমাদের কারো ওপর দায়বদ্ধতা নাই, শুধু জুলাই-আগস্টের নিহত এবং যারা আন্দোলনের অংশগ্রহণ করেছেন তাদের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভারতের আদানি কোম্পানি থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি হচ্ছে আন্তর্জাতিক চুক্তি। এটা হুট করেই বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। বিগত সময়ে বিভিন্ন চুক্তি হয়েছে যা দেশের স্বার্থে হয়নি। আপনারা জানেন, ২০১০ সালের আইনের অধীনে অনেক অন্যায় করা হয়েছে, যার ফলে আমরা এই আইন বাতিল করেছি।
তিনি আরও বলেন, বিগত সময়ে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে যেসব চুক্তি হয়েছে এসবের জন্য সাবেক বিচারপতি মঈনুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বিশেষজ্ঞরা আছেন, ওনারা এসব বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। এই কমিটি আদানি কোম্পানিসহ সাতটি বিষয়ে কাজ করছে। ওনারা কাজ শেষে যে গাইডলাইন দেবেন তার ওপর ভিত্তি করে আমরা চিন্তা করব কার সঙ্গে চুক্তি রাখব আর কার সঙ্গে চুক্তি রাখব না।
আলোচনার সভার আগে তিনি অল-ওয়েদার সড়ক পরিদর্শন করেন। এর আগে সকালে তিনি কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ-চামড়াঘাট সড়ক যথাযথমানে উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় চলমান কার্যক্রম পরিদর্শন ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। সেখান থেকে জেলার শতভাগ হাওর অধ্যুষিত উপজেলা ইটনায় যান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী।
গতকাল শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে ট্রেনে কিশোরগঞ্জ রেল ষ্টেশনে এসে পৌঁছেন উপদেষ্টা। আজ শনিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে ট্রেনেই কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকা যাবেন তিনি।
উল্লেখ, ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলাকে যুক্ত করে হাওরের মাঝখান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে প্রায় ৩০ কিলোমিটার অল-ওয়েদার সড়ক। গত ২৩ নভেম্বর সিলেটে আয়োজিত এক কর্মশালায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছিলেন, সিলেটের নদ নদীর অবাধ পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে ও বিভাগটিকে বন্যার কবল থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনে ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম সড়কের (কিশোরগঞ্জের অল ওয়েদার সড়ক) বেশ কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হতে পারে। এ জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে।
এইচএ