রাজধানীর বনানীর স্টার কাবাবে ‘পচা টিক্কা’ দেওয়ার প্রতিবাদ করায় সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক নামের এক গ্রাহককে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে ঢাকার বনানীর স্টার কাবাব অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের কর্মীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বনানী স্টার কাবাবের ম্যানেজারসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বনানী থানা পুলিশ।
রবিবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকার বনানী স্টার কাবাব থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সারোয়ার।
তিনি বলেন, “স্টার কাবাবে সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক নামের এক ব্যক্তির ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। ইতোমধ্যে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সবার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অজ্ঞাত আরও চার থেকে পাঁচজনের নামে মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আরও কেউ জড়িত থাকলে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
ওসি আরও বলেন, “গ্রেপ্তার সবাইকে সোমবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।”
আহত সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক পেশায় একজন কৃষিবিদ ও গণমাধ্যমকর্মী।
অলক গণমাধ্যমকে জানান, রোববার বিকাল সোয়া ৩টার দিকে এক বন্ধুসহ বনানী স্টার কাবাব দুপুরের খাবার খেতে যান তিনি। সেখানে তিনি ওয়েটারকে মেন্যু জিজ্ঞেস করে খাসির কাচ্চি দিতে বলেন। পরে তিনি কাচ্চির ভেতরে থাকা টিক্কা খাওয়ার সময় তাতে দুর্গন্ধ পান এবং ম্যানেজারের কাছে অভিযোগ দেন। তখন ম্যানেজার টিক্কা চেক না করেই বলেন, টিক্কা এমনই হয়। টেবিলে বসে খান। টিক্কা এমনই হয়, জীবনে খান নাই টিক্কা।
তিনি আরও বলেন, ম্যানেজারের এমন কথার প্রতিবাদ করলে আরও তিনজন বিভিন্ন টেবিল থেকে একই অভিযোগ করেন। এতে ম্যানেজার উত্তেজিত হয়ে কলিংবেল চেপে হোটেলের ১২ থেকে ১৪ জন ওয়েটার ও কয়েকজন দালালকে মুহূর্তের মধ্যে ডেকে আনেন। তারা জড়ো হয়ে আমাকে ঘিরে ফেলেন এবং আমাকে আক্রমণ শুরু করেন। এ সময় দোতলা থেকে স্টাফ ও দালাল মিলিয়ে ১৫ থেকে ১৬ জন আমাকে নিচতলায় যেখানে সিসিটিভি নেই সেখানে নিয়ে যায়। আমি চলে যেতে চাইলে তারা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে মাথায়, পেটে, বুকে, পিঠে, হাতে ও পায়ে লাথি দেয় এবং গলা চেপে ধরে। এতে আমার ডানহাতে প্রচণ্ড আঘাত পাই, কপালের ডান দিকে চোখের উপরে কেটে রক্ত পড়ে ফ্লোর ভিজে যায়।
অলক আরো জানান, এই ঘটনার পর উপস্থিত মানুষজন তাকে উদ্ধার করে এবং থানায় খবর দেয়। পুলিশ এসে তার প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে ম্যানেজারসহ ১০-১১ জনকে নজরদারিতে রাখে এবং বনানী থানা পুলিশ তাদের গাড়িতে করে তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। পরে সন্ধ্যা ৭ টায় তিনি বনানী থানায় গিয়ে মামলা করলে পুলিশ রাতে রেস্তোরাঁটির ম্যানেজারসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে।
সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক বর্তমানে বাসায় বিশ্রামে আছেন বলে জানান।
“স্টার কাবাব অ্যান্ড রেস্টুরেন্টট”-এর বনানী শাখার আগের ম্যানেজার মো. মুসলিমকে পুলিশ গ্রেপ্তার করায় সোমবার ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন মো. রাসেল হাওলাদার। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। আমরা কাজে ব্যস্ত আছি, এই মুহুর্তে কিছু বলতে চাচ্ছি না।”
এবি