এইমাত্র
  • কারখানার মালিক হওয়াই কি অপরাধ শহিদুজ্জামান শুভ'র?
  • ইসরাইলি হামলায় আরও ১০২ ফিলিস্তিনি নিহত
  • আত্মগোপনে মোহাম্মদপুরের ছিনতাই চক্রের মূলহোতারা
  • কর্মহীন মাহিয়া মাহি, ডাক পড়ে শো-রুম উদ্বোধনে
  • ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়নি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • একবার চার্জ দিলে ব্যাটারি চলবে ৫০ বছর
  • বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার অভিনেতা সাইদুর রহমান পাভেল?
  • দেশ পুনর্গঠনে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন: নাহিদ ইসলাম
  • মানুষ হয়ে আসছি, মানুষ হয়েই চলে যেতে চাই: পরীমণি
  • বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারদের তৃতীয় স্থানে মিরাজ
  • আজ বুধবার, ১৫ কার্তিক, ১৪৩১ | ৩০ অক্টোবর, ২০২৪
    ধর্ম ও জীবন

    খাবার গ্রহণে রাসুল (সা.) এর সুন্নত

    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম
    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম

    খাবার গ্রহণে রাসুল (সা.) এর সুন্নত

    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১৩ পিএম
    ছবি: সংগৃহীত

    রাসুল (সা.) তার প্রিয় সাহাবিদের ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ—প্রত্যেক বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছেন। যা দৈনন্দিন কাজ থেকে শুরু করে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সব কাজের পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তার প্রতিটি কর্ম ও পদক্ষেপ মানবতার অনুসরণযোগ্য। সফলতা ও কামিয়াবির মাধ্যম। জীবনপথের পাথেয়। তার কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করলে ‍মুমিনের জীবনে বয়ে যাবে প্রশান্তির ফল্গুধারা।

    রাসুল (সা.) কীভাবে খাবার খেতেন, খাবার গ্রহণে তার কী পদ্ধতি ছিল—সে সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা।

    খাবার গ্রহণের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা: রাসুল (সা.) খাবার গ্রহণের আগে সব সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলতেন। তার সঙ্গীদেরও বিসমিল্লাহ বলতে উৎসাহিত করতেন। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর নাম নিয়ে ও ডান হাত দ্বারা খানা খাও। এবং তোমার দিক হতে খাও। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ৫১৬৭, তিরমিজি, হাদিস নং : ১৯১৩)

    বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেলে: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, “যখন তোমরা খানা খেতে শুরু করো তখন আল্লাহর নাম স্মরণ করো। আর যদি আল্লাহর নাম স্মরণ করতে ভুলে যাও, তাহলে বলো, ‘বিসমিল্লাহি আওয়ালাহু ওআখিরাহ। ” (আবু দাউদ, হাদিস নং : ৩৭৬৭, তিরমিজি, হাদিস নং: ১৮৫৮)

    হাত ধুয়ে শুরু ও শেষ করা: খাবার গ্রহণের আগে হাত ধোয়া আবশ্যক। না হয় বিভিন্ন ধরনের অসুখ দেখা দিতে পারে। রাসুল (সা.) খাওয়ার আগে হাত ধোয়ার আদেশ দিয়েছেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) পানাহারের আগে উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে নিতেন। (মুসনাদে আহমাদ)

    অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) খাওয়ার পর কুলি করতেন এবং হাত ধৌত করতেন। (মুসনাদে আহমাদ ও ইবনে মাজাহ)

    দস্তরখান বিছিয়ে খাওয়া: আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) পায়াবিশিষ্ট বড় পাত্রে খাবার খেতেন না। কাতাদা (রা.) কে জিজ্ঞেস করা হলো, তাহলে কীসের ওপর খানা খেতেন? তিনি বললেন, ‘চামড়ার দস্তরখানের ওপর। ’ (বোখারি : ৫৩৮৬)

    ডান হাত দিয়ে খাওয়া: রাসুল (সা.) আজীবন ডান হাত দিয়ে খাবার খেতেন। বাম হাত দিয়ে খাবার খেতে নিষেধ করেছেন তিনি। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা বাম হাত দ্বারা খাবার খেয়ো না ও পান করো না। কেননা শয়তান বাম হাতে খায় ও পান করে। ’ (বুখারি, হাদিস নং: ৫৩৭৬; মুসলিম, হাদিস নং: ২০২২)

    হাত চেটে খাওয়া: রাসুল (সা.) খাওয়ার সময় সর্বদা হাত চেটে খেতেন। না চাটা পর্যন্ত কখনো হাত মুছতেন না। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন খাবার গ্রহণ করবে, তখন হাত চাটা নাগাদ তোমরা হাতকে মুছবে (ধোয়া) না। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ৫২৪৫)

    আঙুল চেটে খাওয়া: আঙুল চেটে খাওয়ার ফলে বরকত লাভের অধিক সম্ভাবনা থাকে। কারণ খাবারের বরকত কোথায় রয়েছে মানুষ তা জানে না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন খাবার গ্রহণ করো তখন আঙুল চেটে খাও। কেননা বরকত কোথায় রয়েছে তা তোমরা জানো না। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ১৯১৪)

    পড়ে যাওয়া খাবার তুলে খাওয়া: খাবার গ্রহণের সময় কখনো কখনো থালা-বাসন থেকে এক-দুইটি ভাত, রুটির টুকরো কিংবা অন্য কোনো খাবার পড়ে যায়। সম্ভব হলে এগুলো তুলে পরিচ্ছন্ন করে খাওয়া চাই।

    রাসুল (সা.)-এর খাবারকালে যদি কোনো খাবার পড়ে যেত, তাহলে তিনি তুলে খেতেন। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের খাবার আহারকালে যদি লুকমা পড়ে যায়, তাহলে ময়লা ফেলে তা ভক্ষণ করো। শয়তানের জন্য ফেলে রেখো না। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ১৯১৫; ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৩৪০৩)

    হেলান দিয়ে না খাওয়া: কোনো কিছুর ওপর হেলান দিয়ে খাবার খেতে তিনি নিষেধ করেছেন। হেলান দিয়ে খাবার খেলে পেট বড় হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে দাম্ভিকতা প্রকাশ পায়। আবু হুজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-এর দরবারে ছিলাম। তিনি এক ব্যক্তিকে বলেন, আমি টেক লাগানো অবস্থায় কোনো কিছু ভক্ষণ করি না। (বুখারি, হাদিস নং: ৫১৯০, তিরমিজি, হাদিস নং: ১৯৮৬)

    খাবারের দোষ-ত্রুটি না ধরা: শত চেষ্টা সত্ত্বেও খাবারে দোষ-ত্রুটি থেকে যাওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু এ নিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঝগড়াঝাটি করা নিতান্ত বেমানান। রাসুল (সা.) কখনো খাবারের দোষ ধরতেন না। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) কখনো খাবারের দোষ-ত্রুটি ধরতেন না। তার পছন্দ হলে খেতেন, আর অপছন্দ হলে খেতেন না। (বুখারি, হাদিস নং : ৫১৯৮; ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৩৩৮২)

    খাবারে ফুঁ না দেওয়া: খাবার ও পানীয়তে ফুঁ দেওয়ার কারণে অনেক ধরনের রোগ হতে পারে। রাসুল (সা.) খাবারে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) কখনো খাবারে ফুঁ দিতেন না। কোনো কিছু পান করার সময়ও তিনি ফুঁ দিতেন না। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং : ৩৪১৩)

    খাবারের শেষে দোয়া পড়া: আল্লাহ তাআলা খাবারের মাধ্যমে আমাদের প্রতি অনেক বড় দয়া ও অনুগ্রহ করেন। এ দয়ার কৃতজ্ঞতা আদায় করা সভ্যতা ও শিষ্টাচারের অন্তর্ভুক্ত। খাবার গ্রহণ শেষে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করা অপরিহার্য।

    খাবার শেষে রাসুল (সা.) আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাতেন ও দোয়া পড়তেন। আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) খাবার শেষ করে বলতেন, ‘আলহামদুলিল্লাহি হামদান কাসিরান ত্বয়্যিবান মুবারাকান ফিহি, গায়রা মাকফিইন, ওলা মুয়াদ্দায়িন ওলা মুসতাগনা আনহু রাব্বানা। ’ তিনি কখনো এই দোয়া পড়তেন: ‘আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আতআমানা ওয়াছাকানা ওয়াজাআলানা মিনাল মুসলিমিন। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ৫৪৫৮)

    রাসুল (সা.)-এর সুন্নতগুলো জীবনে বাস্তবায়ন সম্ভব হলে, জীবন সুন্দর ও সার্থক হবে। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।

    এইচএ

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…