গওহরডাঙ্গা মাদরাসার ৮৯তম বার্ষিক মাহফিল উপলক্ষে নারীদের বাজারে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞার ফতোয়া জারি করার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। ভারতীয় কিছু মিডিয়া এবং ব্যক্তিরা এই দাবি তুলে অপপ্রচার চালিয়েছে, যা পরে ফ্যাক্টচেক করে ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
ভারতীয় বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এবং লেখিকা তসলিমা নাসরিন ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করেন, গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মাহফিল থেকে নারীদের বাজারে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে ভারতীয় গণমাধ্যম যেমন আজতক বাংলা, রিপাবলিক বাংলা, টিভি৯ বাংলা, জি২৪ ঘণ্টা, এবং আরও কয়েকটি চ্যানেলও এই দাবি প্রচার করে।
ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মাহফিলের অস্থায়ী দোকানপাটের জন্য নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছিল, যা শুধুমাত্র তিন দিনের মাহফিলের জন্য প্রযোজ্য।
ভিডিওতে দোকানদারদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, “এটা সাধারণ মেলা নয়, দ্বীনি মাহফিল। দোকানে কোনো গুনাহর কাজ বা নারীদের আসা বন্ধ রাখতে হবে।”
এটি কোনো বাজার বা সার্বজনীন স্থানে নারীদের নিষেধাজ্ঞা নয়। বরং মাহফিলের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে এটি করা হয়েছিল।
গওহরডাঙ্গা মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মুফতি উসামা আমিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন: “এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র মাহফিলের সময়ের জন্য। নারীদের জন্য আলাদা বসার এবং বয়ান শোনার ব্যবস্থা ছিল।” বিবৃতিতে ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং মিথ্যাচার বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধান এবং যমুনা টিভির প্রতিবেদনেও এই দাবির অসত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। স্থানীয় হিন্দু নারীরাও জানিয়েছেন, বাজারে যাতায়াতে কোনো বাধা নেই।
এই অপপ্রচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী গওহরডাঙ্গা মাদরাসার ভাবমূর্তি এবং বাংলাদেশের সামাজিক পরিবেশকে ভুলভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে। সঠিক তথ্য যাচাই ছাড়া এমন মিথ্যাচার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সামাজিক সম্প্রীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এসএফ