ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। এতে সরবরাহ বেড়ে দাম কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের। উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে পণ্যটির রফতানি বাড়াতে ন্যূনতম রফতানি মূল্য কমিয়েছে ভারত।
আগে প্রতিটন পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানি মূল্য ৪০৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ থাকলেও বর্তমানে তা কমিয়ে ৩০৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করেছে ভারত। এতে করে দেশে পেঁয়াজের আমদানি যেমন বাড়বে তেমনি দাম কমে আসবে বলে মনে করছেন আমদানিকারকরা।
রবিবার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানি মূল্য ৪০৫ মার্কিন ডলার থেকে ১০০ মার্কিন ডলার কমিয়ে নতুন এই মূল্য নির্ধারণ করে ভারতের মূল্য নির্ধারণী সংস্থা। নতুন এই রফতানি মূল্য আজ (সোমবার) থেকেই কার্যকর হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
ভারতের হিলির সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অনিল সরকার বলেন, ‘এতদিন ভারত থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানির ক্ষেত্রে প্রতিটন পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানি মূল্য ছিল ৪০৫ মার্কিন ডলার। এর কমে কোনও এলসি গ্রহণ করছিল না। সেই অবস্থা থেকে বর্তমানে রফতানি মূল্য ১০০ ডলার করে কমিয়েছে ভারত সরকার। এখন থেকে প্রতিটন পেঁয়াজ ৩০৫ মার্কিন ডলার মূল্যে এলসি গ্রহণ করা হবে। তবে পেঁয়াজ রফতানির ক্ষেত্রে যে রফতানি শুল্ক সেটি আগের মতোই আছে।’
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন জানান, দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরববাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রেখেছে আমদানিকারকরা। তবে ভারত সরকার সে দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য রফতানি নিরুৎসাহিত করতে পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানি মূল্য ৪০৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে দেয়। এতে বাড়তি মূল্যে পেঁয়াজ কিনতে হওয়ায় দেশের বাজারে পণ্যটির দাম বাড়তির দিকেই ছিল।
সম্প্রতি দেশীয় নতুন পেঁয়াজ ওঠার ফলে পণ্যটির সরবরাহ বাড়ায় দাম যেমন কমেছে তেমনি দেশের বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা অনেকটাই কমে এসেছে। এর ফলে বাড়তি দামে পেঁয়াজ আমদানি করে কম দামে বিক্রি হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছিল আমদানিকারকদের। এমন অবস্থায় লোকসান থেকে বাঁচতে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের লোডিং কমিয়ে দেওয়ায় পেঁয়াজের আমদানি অনেকটাই কমে এসেছে।
অপরদিকে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করায় সে দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দাম অনেকটাই কমে এসেছে। তবে দাম কমলেও পেঁয়াজের ন্যূনতম রফতানি মূল্য ৪০৫ মার্কিন ডলার নির্ধারিত থাকায় প্রতিকেজি পেঁয়াজ আমদানিতে ভারতে রফতানি শুল্ক দিতে হতো ১০ টাকার মতো।
বর্তমানে ভারতে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। ফলে সে দেশের বাজারে পণ্যটির দাম পড়তির দিকে। এ নিয়ে সম্প্রতি ভারতীয় কৃষকরা আন্দোলন শুরু করেছেন। এমন অবস্থায় কৃষকদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে পেঁয়াজের রফতানি বাড়াতে প্রতিটনের রফতানি মূল্য ১০০ মার্কিন ডলার করে কমিয়েছে ভারত।
রফতানি মূল্য কমার ফলে বর্তমানে এক ট্রাক পেঁয়াজ আমদানিতে ভারতকে ৫০ হাজার রুপির মতো কম শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম কমেছে ২ রুপি। সেই সঙ্গে এক ট্রাক পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে আগের চেয়ে ৪ লাখ টাকা করে কমে এলসি খোলা যাবে।
এবি