রাঙ্গুনিয়ার মানুষের জীবনে দীর্ঘদিন ধরে এক রহস্যময় চরিত্র হয়ে বিচরণ করছিল ‘ভদ্র জিনের বাদশা’ নামে পরিচিত এক প্রতারক। মানুষের বিশ্বাস ও ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে তিনি চালিয়ে যাচ্ছিলেন এক অভিনব প্রতারণার ফাঁদ। তবে শেষ পর্যন্ত তার মিথ্যার মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে জনতার হাতে।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগরের তুপ্পার পাড় এলাকায় চাঁদা তুলতে গিয়ে জনগণের হাতে ধরা পড়েন তিনি। পরে স্থানীয়রা তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
আসল নাম ওমর ফারুক হলেও, তিনি এলাকায় পরিচিত ছিলেন ‘ভদ্র জিনের বাদশা’ নামে। জানা গেছে, তিনি আগে বড়ুয়া ছিলেন এবং পরে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। নিজের চারিত্রিক গুণ ও বিশেষ ক্ষমতার বাহক হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করে তিনি মানুষের সরল বিশ্বাসকে পুঁজি করে প্রতারণা করে আসছিলেন।
তার প্রধান অস্ত্র ছিল জিন হাজির করার গল্প। বিভিন্ন মানুষের সমস্যা সমাধানের নামে তিনি টাকা হাতিয়ে নিতেন। বিশেষত, ব্যবসায়িক সাফল্য, পারিবারিক কলহ মিটানো কিংবা হারানো অর্থ ফেরত এনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি প্রতারণার জাল বিস্তার করতেন।
স্থানীয়দের মতে, কিছুদিন আগেও তিনি এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের জমানো টাকা ফেরত এনে দেওয়ার নাম করে ৩০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। এরপর থেকেই তিনি গা ঢাকা দেন।
সম্প্রতি তিনি নিজের মেয়ের বিয়ের আয়োজনের জন্য বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে চাঁদা তুলছিলেন। অজানা কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে, মানুষের সহানুভূতি আদায়ের জন্য তিনি নানা মিথ্যা গল্প বানিয়ে টাকা সংগ্রহ করছিলেন। তবে শেষ রক্ষা আর হলো না।
শুক্রবার সোনারগাঁও এলাকায় চাঁদা তুলতে গেলে স্থানীয় জনগণের সন্দেহ হয়। তারা তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার প্রতারণার নানা কীর্তি প্রকাশ হয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ জনতা পরে পুলিশে খবর দিলে, রাঙ্গুনিয়া থানার একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করে সময়ের কণ্ঠস্বর-কে জানান, “জনগণের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রতারককে আটক করি। বর্তমানে তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এনআই