আজ ২০ মার্চ আন্তর্জাতিক সুখ দিবস। মানুষকে সহজ, দৈনন্দিন সুখের অভ্যাস অনুশীলন করতে উৎসাহিত করে বিশ্বকে একটি মানবিক এবং সুখী জায়গা করে তোলাই এ দিবসের লক্ষ্য। ২০১২ সালের ২৮ জুন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক অধিবেশনে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর বিশ্বের একাধিক দেশ নানা আয়োজনে দিনটি পালন করে আসছে।
অন্যরকম এ দিবসটির প্রতিষ্ঠাতা জাতিসংঘের উপদেষ্টা এবং শান্তি ও নিরাপত্তা অর্থনীতিবিদদের প্রতিনিধি জেম এলিয়েন। ২০১১ সালে জাতিসংঘে সুখ দিবসের ধারণাটি উপস্থাপন করেন এলিয়েন। তবে এই দিবস প্রচলনের প্রচার শুরু হয় ভুটানের হাত ধরে। দেশটিতে এরই মধ্যে সুখ-সূচকের ভিত্তিতে জাতীয় সমৃদ্ধির পরিমাপের প্রচলন করা হয়েছে। তারা জাতিসংঘের কাছে বছরের একটি দিন সুখ দিবস হিসেবে পালনের আহ্বান জানায়। মূলত এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ‘আন্তর্জাতিক সুখ দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২০১২ সালের ২৮ জুন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক অধিবেশনে এই দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তখন সেই অধিবেশনে জাতিসংঘের ১৯৩টি দেশের প্রতিনিধিরা দিবসটিকে স্বীকৃতি দেন। দিবসটি প্রথম ২০১৩ সালে পালিত হয়।
জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রস্তাবে বলা হয়, ‘মানুষের জীবনের মূল উদ্দেশ্য সুখে থাকা। ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণসহ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিতে দিবসটি পালন করা হবে। সদস্যভুক্ত দেশগুলোর ওপর পূর্ণ এক বছর জরিপ পরিচালনা করে এই দিবসে সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করে থাকে জাতিসংঘ।’
‘অ্যাকশন ফর হ্যাপিনেস’, ‘হ্যাপিনেসডে ডট ওআরজি’ এবং ‘জাতিসংঘ’সহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সুখ দিবস উদযাপন ও আয়োজন করা হয়। আন্তর্জাতিক সুখ দিবস মানুষকে এই বিষয়টি বিবেচনা করতে উৎসাহিত করে যে, সুখ খোঁজার বিভিন্ন উপায় রয়েছে, যার মধ্যে অন্যদের সঙ্গে অর্থপূর্ণ সম্পর্ক, মানসিক সুস্বাস্থ্য এবং আত্মতৃপ্তির বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য।
‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট ২০২৪’-এর হিসাব অনুযায়ী সুখী দেশের তালিকায় শীর্ষে আছে ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, সুইডেন, ইসরাইল, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, লুক্সেমবার্গ, সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া।
সুখ মানুষের মৌলিক অধিকার, এই বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করেই আন্তর্জাতিক সুখ দিবস পালিত হয়। একইসঙ্গে মনে করা হয় যে, সুখ ও কল্যাণের প্রচার একটি আরও শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই বিশ্বের দিকে পরিচালিত করতে পারে। জীবনে রূপান্তর ঘটাতে এবং পৃথিবীকে সবার জন্য একটি উন্নত স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে সুখের শক্তি উদযাপনের দিন এটি। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আরও সুখী, কল্যাণময় ও সহানুভূতিশীল বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে দিবসটি পালন করা হয়। এটি মানুষের জীবনে সুখের গুরুত্ব উদযাপন এবং স্বীকৃতি দেয়ার একটি দিন। এই দিনে ব্যক্তি, সম্প্রদায় ও সংস্থা পর্যায়ে সুখ ও কল্যাণ বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করা হয়।
এবি