গাজীপুরের টঙ্গীতে প্রশাসন এবং হকারদের মাঝে উচ্ছেদ অভিযান কে কেন্দ্র করে ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলছে। টঙ্গী পূর্ব এবং পশ্চিম থানা কর্তৃক একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করার পরেও হকার নির্মূল করা সম্ভব হয়নি।
আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে যানজট ও পথচারীদের রাস্তা পারাপারসহ বিভিন্ন ভোগান্তি নিরসনে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন অভিযান চলমান রয়েছে। তার মধ্যে ফুটপাতে হকারদের উচ্ছেদ অন্যতম। কিন্তু হকারদের একাধিক বার রাস্তা থেকে উচ্ছেদ করার পরেও হকাররা মহাসড়ক দখল করে রেখেছে। উচ্ছেদ অভিযানের খানিকটা সময়ের পর হকাররা ফের মহাসড়ক দখল করে।
সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী চেরাগআলী এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল ১ এর দেয়াল ঘেঁষে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে শতাধিক হকাররা বিভিন্ন দোকান বসিয়েছে। ফুটপাতসহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের একপাশ সম্পূর্ণ হকারদের দখলে। পথচারীসহ মহাসড়কের যান বাহন চলাচলে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। মাঝে মাঝে দীর্ঘ যানযটের সৃষ্টি হচ্ছে।
গত শনিবার (১৯ মার্চ) এমনই একটি চিত্র দেখা যায় চেরাগআলী এলাকায়। টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশের উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার ১০ মিনিট পরেই হকাররা পূনরায় মহাসড়ক দখল করে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিরুপ প্রতিক্রিয়া কাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, একদিকে পুলিশ হকার উচ্ছেদ করে চলে যায় অপরদিকে আবার হকাররা আবার এসে বসে পরে। এই উচ্ছেদের তো কোনো মানে হয় না। হয়তো একেবারে উচ্ছেদ করুক, নয়তো উচ্ছেদ অভিযানের নামে নাটকিয়তা বন্ধ করে দেক। ফুটপাতের জায়গা সম্পূর্ণ হকারদের দখলে। ফুটপাতের পরবর্তীতে মহাসড়ক দিয়ে হাটাচলা করতে হয়। মাঝে মাঝে দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে অনেকেই। আমরা একটা সুষ্ঠ সমাধান চাই।
অপরদিকে চেরাগ আলীর হকার তারেক জানান, আমরা গরীব মানুষ। ফুটপাতে ভ্যানগাড়ি দিয়া জিনিষ বিক্রি করি। আমাদের তো দোকান ভাড়া নিয়া ব্যবসা করা সম্ভব নাহ। তাই ফুটপাতে একটু জায়গা নিয়া ব্যবসা কইরা সংসার চালাই।
অপর এক হকার সোহরাব জানান, পুলিশ আসলে কিছুক্ষণ পালায় থাকি নয়তো ধইরা নিয়া যায়। ধইরা নিলে ছুটায় আনার মতোন আমাদের কেউ নাই। পুলিশ চইলা গেলে আবার বসি। আমাদের আর অন্য কোনো জায়গা নাই।
হকার ওয়াদুদ বলেন, সামনে ঈদ। ঈদের সময় পরিবারের সবাই আমাদের মুখের দিকে তাকায় থাকে। আমরা কই যাইয়া ব্যবসা করমু বলেন তো। তাই একটু ঝুঁকি নিয়াই এখানেই ব্যবসা করি।
এবিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অপরাধ দক্ষিণ বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার এন এম নাসিরুদ্দিন জানান, আমাদের উচ্ছেদ অভিযান চলমান রয়েছে। যেসব জায়গায় বেশি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় আমরা সেই জায়গাগুলোতে বেশি নজরদারিতে রাখি। তবে সকলের সমন্বয় ছাড়া স্থায়ীভাবে হকার উচ্ছেদ সম্ভব নয়।
এসআর