নগরের আলোচিত ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান হত্যার ঘটনায় বাবা ও মেয়েকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেলের এসআই মো. তানজিল।
গ্রেপ্তার হাফিজা বেগম শান্তা (৩১) নিহত ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমানের কথিত প্রেমিকা ও গ্রেপ্তার শওকত হোসেন মোল্লা (৬৩) হাফিজা বেগম শান্তার বাবা। এরা উভয়ই বরিশাল নগরের এয়ারপোর্ট থানাধীন ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের শেরে বাংলা সড়কের বাসিন্দা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ৯ এপ্রিল রাতে বরিশাল নগরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ অ্যাভিনিউর একটি দোতলা বাসায় পরকিয়া প্রেম ঘটিত বিষয় নিয়ে গ্রেপ্তার হাফিজা বেগম শান্তা ও তার সহযোগী আত্মীয় স্বজনদের ছুরিকাঘাতে গুরুত্বর আহত হয় ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান। পরে তাকে শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ এপ্রিল রাতে মৃত্যুবরণ করেন ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান। এ ঘটনায় নিহতের ভাই কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
মামলা দায়েরর পর থানা পুলিশের সদস্যরা মৃতদেহের সুরতহাল ও ময়নাতদন্তসহ প্রাথমিক কার্যাবলি সম্পাদন করে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে।
যার ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্ত প্রেমিকা হাফিজা বেগম শান্তা ও তার বাবা শওকত হোসেন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
প্রাথমিক তদন্তের সূত্র ধরে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাজীব রেজা জানান, অভিযুক্ত হাফিজা বেগম ওরফে শান্তার সাথে ভিকটিম মাসুদুর রহমানের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং দীর্ঘদিন থেকে শান্তা তার (নিহত ব্যবসায়ীর) টাকা পয়সা আত্মসাৎ করে আসছে।
প্রাথমিক তদন্তে আরও জানাগেছে, অভিযুক্ত শান্তা ঘটনার দিন ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমানকে প্ররোচিত করে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায় এবং বিয়ে করার জন্য মৌখিকভাবে চাপ প্রয়োগ করে। তবে তাতে রাজি না হলে অভিযুক্ত শান্তা তার অপর সহযোগী অভিযুক্তদের সহায়তায় ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে। পাশাপাশি ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমানের সাথে থাকা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমানকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করালে ভিকটিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
উল্লেখ্য, নিহত মাসুদুর রহমান (৪৫) বরিশাল নগরের নতুন বাজার টেম্পু স্ট্যান্ড এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি ওই এলাকায় বেকারির ব্যবসা করতেন।
মৃত্যুর পর মাসুদুর রহমানের ভাই মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, তার বড় ভাই মাসুদুর রহমানের বেকারির ব্যবসা রয়েছে। তার প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পরে মাসুদ শান্তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। গত বুধবার বেকারির মালামাল আনার জন্য ২ লাখ টাকা নিয়ে রওনা হয় মাসুদ। তখন শান্তা ফোন করে মাসুদকে বাসায় ডাকে। এরপর শান্তা ও তার ভাই লোকমান হোসেন ওই টাকা নেওয়ার জন্য চেষ্টা করলে মাসুদ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় শান্তা তাকে ছুরি দিয়ে পেটে আঘাত করে।
এআই