দীর্ঘদিনের দাবি ও ভোগান্তির অবসান ঘটিয়ে আজ বৃহস্পতিবার থেকে কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে নিয়মিত সি-ট্রাক চলাচল শুরু হচ্ছে। সকাল সাড়ে ১০টায় কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর ৬ নম্বর জেটিঘাটে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন তিনবার করে ২৫০ জন যাত্রী বহনে সক্ষম এই সি-ট্রাক চলাচল করবে কক্সবাজার ও মহেশখালীর মধ্যে। বাঁকখালী নদীর ৬ নম্বর ঘাট থেকে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা এবং নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে মহেশখালী যেতে ভাড়া পড়বে ৪০ টাকা।
সি-ট্রাক চলাচলের ঘোষণা আসার পর থেকেই দ্বীপবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে স্বস্তি ও আনন্দের জোয়ার। বর্ষা মৌসুমে উত্তাল সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি এবং অতিরিক্ত ভাড়ার বোঝা—এই দুই ভোগান্তির অবসানে আশাবাদী স্থানীয়রা।
সাধারণ যাত্রীরা বলছেন, এত দিন এ নৌপথে কাঠের নৌকা, লোহার গামবোট ও স্পিডবোটে করে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হতো। এসব যান নিয়ন্ত্রণ করত একদল প্রভাবশালী সিন্ডিকেট, যারা যাত্রীদের নানাভাবে জিম্মি করে রাখত। সি-ট্রাক চালু হওয়ায় এই চক্রের প্রভাব কমবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র কক্সবাজার নদীবন্দর (কস্তুরাঘাট) শাখার সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান বলেন, আপাতত প্রতিদিন তিনবার করে সি-ট্রাক যাওয়া-আসা করবে। সময়সূচিও নির্ধারণ করা হয়েছে। যাত্রীদের চাহিদা বাড়লে সময় বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। যাত্রীরা যেহেতু ভাড়া কমানোর দাবি তুলছেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
সি-ট্রাক চলাচলের সময়সূচি:
কক্সবাজার থেকে মহেশখালী: সকাল ৮:৩০, দুপুর ১২টা, সন্ধ্যা ৬টা
মহেশখালী থেকে কক্সবাজার: সকাল ৭:৩০, বেলা ১১টা, বিকেল ৫টা
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হেদায়েত উল্যাহ জানান, সি-ট্রাক চলাচল নিয়ে দ্বীপবাসী খুবই উচ্ছ্বসিত। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মহেশখালী জেটিঘাটে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে।
প্রসঙ্গত, ৩৮৮ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে রয়েছে একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়ন। ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী এখানকার জনসংখ্যা ৩ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি। আদিনাথ মন্দিরসহ একাধিক পর্যটন স্পট থাকায় সারা বছর পর্যটকের পদচারণা লেগেই থাকে।
স্থানীয়দের প্রত্যাশা, সি-ট্রাক সেবা নিয়মিত থাকলে ভ্রমণ হবে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী, এবং পর্যটনশিল্পও পাবে নতুন গতি।
এসআর