চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সন্ত্রাসী কায়দায় ইত্তেফাক প্রতিনিধি মো. ইলিয়াছ ও তার পরিবারের বসতভিটা দখল করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের উত্তর জলদী নেয়াজর পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। বাদী হয়ে ভুক্তভোগীর মেজো ভাই অভিযোগ তুলেছেন একই এলাকার তিন জনের বিরুদ্ধে। বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগীর মেজো ভাই অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক নুর মোহাম্মদ ইউনুছ একই এলাকার মৃত মোজাহেরুল হকের ছেলে। অভিযুক্তরা হলেন- মো. জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) এবং তার দুই সহোদর মো. তারেক (৩০) ও মো. মিশকাতব(২২)। একই এলাকার মৃত কবির আহমদের ছেলে তারা। এছাড়াও উক্ত তিন সহোদরকে সহযোগিতা করে শাহেদ নামের এক সিএনজি টেক্সি চালক।
এদিকে, ভুক্তভোগীর ভাই ইউনুছ বলেন, গত ২৮ জানুয়ারি সকাল ৯ টার দিকে পরিবারের ভিটার সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে সীমানার বিভিন্ন বনজ কাটা শুরু করে অভিযুক্তরা। প্রতিবাদ করলে দা, কিরিচ হাতে নিয়ে আমাকেসহ আমার পরিবারকে খুন-জখমের হুমকি দেয় তারা। এক পর্যায়ে বসতভিটার ৩/৪ ফুট জায়গা দখল করে পাকা ওয়াল নির্মাণ শুরু করে। পরে ২৯ জানুয়ারি বাঁশখালী থানার ওসি বরাবরে আমি লিখিতভাবে জানিয়েছি। তবে ওসির নির্দেশনা অমান্য করে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখে প্রতিপক্ষরা। ফলে ১৬ ফেব্রুয়ারি বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চট্টগ্রাম( দক্ষিণ) আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৪৫ ধারা মোতাবেক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করি।
তিনি আরও বলেন, আদালত উভয় পক্ষের মধ্যে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার ব্যবস্থা নিতে বাঁশখালী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। একই আদালত নালিশী ভূমি তদন্ত করে প্রেরিত ছক মোতাবেক স্কেচ ম্যাপসহ প্রতিবেদন দাখিল করার জন্যে এসিল্যান্ডকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক উক্ত এলাকায় সরেজমিনে পুলিশ পাঠায় ওসি। নির্মাণ কাজ বন্ধসহ উভয় পক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দেন তিনি।
অভিযোগকারীর ভাষ্যমতে, গত ১ মার্চ বাঁশখালী পুলিশের এ এস আই মো. ইকবাল হোসেন সরেজমিনে গিয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চট্টগ্রাম দক্ষিণের মিস মামলার নির্দেশনা মোতাবেক উভয় পক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য একটি লিখিত নোটিশ দেন। তবে তারপরও প্রতিপক্ষরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সন্ত্রাসী কায়দায় ঘর নির্মাণ কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। নির্মাণের সময় প্রতিপক্ষসহ এদের বহিরাগত সন্ত্রাসীরাও ইউনুছ ও তার স্ত্রী খালেদা বেগমসহ পরিবারের লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ হত্যার হুমকি ধমকি দেয়। পরে ১২ এপ্রিল এহেন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন খালেদা বেগম। তবে তাতেও প্রতিপক্ষরা পাত্তা না দিয়ে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখে।
প্রতিপক্ষের মো. মিশকাত বলেন, আমাদের পৈত্রিক ভিটায় ঘর করতেছি। মাস্টার নুর শুধু শুধু হয়রানি করছে আমাদেরকে। ২২ এপ্রিল ভূমি অফিস উক্ত জায়গা সরেজমিনে তদন্তের জন্য উভয় পক্ষকে নোটিশ পাঠিয়েছে। নোটিশে আগামী ৫মে তদন্তের দিন বিকালে উভয় পক্ষকে মূল দলিল ও রেকর্ডসহ উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে, সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিপক্ষরা ইতোমধ্যে পাকা দেওয়াল তৈরি করে ঘর নির্মাণ কাজ শেষ করে ফেলেছে। ছাউনি হিসেবে টিন লাগানো বাকি আছে। তবে ঘর তৈরিতে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কোন অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, আদালতের কপি পাওয়ার পর উক্ত এলাকায় পুলিশ পাঠিয়েছি। উভয় পক্ষকেই শান্ত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এমআর