“এই প্রজন্ম সুপ্ত আগ্নেয়গিরির মতো। যে কোনো সময়, যে কোনো প্রেক্ষাপটে জ্বলে উঠতে পারে। কারণ তারা কখনোই ফ্যাসিবাদ, অন্যায় ও জুলুমকে মেনে নেবে না”—বক্তব্যে এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়ামে জেলা ছাত্রশিবিরের আয়োজনে ‘স্মার্ট টুমে আইকন টুমোরো’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ১৫ বছর ধরে দেশপ্রেমের মিথ্যা বয়ান তুলে ও ৭১’র চেতনার কথা বলে দেশে গণহত্যা চালানো হয়েছে। আলেম-ওলামা, সেনা অফিসার ও দেশের চৌকস মানুষদের হত্যা করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই আইনের অপব্যবহার করে তাদের ওপর নেমে এসেছে নির্যাতনের খড়্গ।
জাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, “দেশপ্রেমের নামে যারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, সেই অর্থ দিয়ে চারটি জাতীয় বাজেট করা যেতো। তারা এখন আবার ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যা কখনোই সফল হবে না।”
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া ‘বিপ্লব’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সেই বিপ্লবে সবার অবদান ছিল, কিন্তু আজও অনেকের মাঝে তার প্রতিচ্ছবি দেখা যায় না। তারা এখনও আগের মতোই ক্ষমতার স্বার্থে ফ্যাসিবাদ কায়েমে তৎপর।”
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “যারা অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবে, তাদের পরিণতি হবে অতীতের ফ্যাসিস্ট, ফেরাউন ও জুলুমবাদীদের চেয়েও ভয়াবহ।”
আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আবরার তার বন্ধুবান্ধবদের হাতেই নিহত হন, কারণ তিনি ভারতের পানি সন্ত্রাস ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। সেই অপরাধেই তাকে হত্যা করা হয়।”
বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ড নিয়েও বক্তব্য দেন তিনি। বলেন, “হরতালের সময় বিশ্বজিৎকে শিবির কর্মী আখ্যা দিয়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনী তখন সাধারণ মানুষ রক্ষা না করে বরং ফ্যাসিবাদ টিকিয়ে রাখতে ভূমিকা রাখে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের আমির ইকবাল হোসাইন, নায়েবে আমির মফিজ উদ্দিন, জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ হিমু, জেলা শিবিরের সভাপতি জুলফিকার রহমানসহ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।
শেষে জাহিদুল ইসলাম তরুণদের উদ্দেশে মাদকমুক্ত জীবন গড়ে তোলার এবং আল্লাহর দেখানো পথে চলার আহ্বান জানান।
এনআই