পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের নতুন ডীন হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রহমান। তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদের পাবিপ্রবি শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং আওয়ামী রাজনৈতিক অঙ্গনের পরিচিত মুখ।
২৩ এপ্রিল(বুধবার)বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়, আগামী ১ মে থেকে পরবর্তী দুই বছরের জন্য তাকে এই পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কারণে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই ড. হাসিবুর রহমান নানা রকম প্রভাব বিস্তার করে আসছিলেন। এর আগেও তিনি প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় নিজের স্ত্রীকে নিয়োগ দিতে গিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে বিতর্কে জড়ান। তাছাড়া নিয়মের বাইরে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির ঘটনাও আলোচনায় আসে।
তার পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ডও আওয়ামী রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। আপন ভাই ইসারত আলী ছিলেন আটঘরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এবং পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। অপর ভাই হানিফ ছিলেন চাঁদভা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান। ড. হাসিবুর নিজেও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালান।
২০২১ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর থাকার সময় নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন অঙ্গভঙ্গির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা টিকটকে ভাইরাল হলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন।
এমন এক বিতর্কিত ব্যক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক পদে নিয়োগ দেয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব শিক্ষক-প্রশাসক আওয়ামী একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, ড. হাসিবুর তাদের মধ্যে অন্যতম। তার নিয়োগকে অনেকে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের সঙ্গে ‘বেইমানি’ হিসেবে দেখছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল আওয়াল ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম বলেন, “নিয়োগটি একেবারেই নিয়মতান্ত্রিক। রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, বরং জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে তাকে ডীন পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।”
নিজের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে অধ্যাপক হাসিবুর রহমান বলেন, “এটি একটি একাডেমিক পদ। রাজনীতির সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী নিয়োগ পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু পরিষদ তো একটি অরাজনৈতিক সংগঠন।”
তবে ডীন হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার অনুভূতি জানতে চাওয়া হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এনআই