এইমাত্র
  • বাংলাদেশ ভ্রমণে মার্কিন দূতাবাসের সতর্কতা জারি
  • ২০২৮ কোপা আমেরিকা আয়োজনের দৌড়ে যুক্তরাষ্ট্র ও আর্জেন্টিনা
  • সেভেন সিস্টার্সকে ভারত থেকে আলাদা করে দেবো: হাসনাত
  • দিল্লিতে ২৭টি সিগারেট খাওয়ার সমান ক্ষতি হবে মেসির ফুসফুুসে!
  • গালফ প্রো কার চ্যাম্পিয়ন হলেন অভিক আনোয়ার
  • সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে
  • নেপালকে হারিয়ে সেমির পথে বাংলাদেশ
  • বিএনপির প্রার্থী পুনঃবিবেচনার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
  • পিএসএলের কারণে পিছোতে পারে পাকিস্তানের বাংলাদেশ সফর
  • ৩০ বছর পর রোগীর পেট থেকে বের হলো লাইটার
  • আজ সোমবার, ১ পৌষ, ১৪৩২ | ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    কটিয়াদীতে ফসলি জমিতে বেপরোয়া মাটি কাটার ধ্বংসযজ্ঞ

    ছাইদুর রহমান নাঈম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৪ পিএম
    ছাইদুর রহমান নাঈম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৪ পিএম

    কটিয়াদীতে ফসলি জমিতে বেপরোয়া মাটি কাটার ধ্বংসযজ্ঞ

    ছাইদুর রহমান নাঈম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৪ পিএম

    কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলা জুড়ে কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না জমির উপরিভাগ (টপসয়েল) বিক্রির মহোৎসব। প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে প্রভাবশালীদের আশ্রয়ে পরিবেশ আইন অমান্য করে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে।

    জমির মালিকদের থেকে কমদামে কিনে ডাবল দামে বিক্রি হচ্ছে এসব মাটি। এসব নিয়ন্ত্রণে নেই প্রশাসনের কোন সংস্থার নিয়মিত মনিটরিং। ফলে বাধাহীনভাবে বেপরোয়া চলছে মাটিকাটার কাজ। এতে কৃষি জমির উর্বরতা হারানোর পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশের ভারসাম্য, ভেঙে যাচ্ছে এলাকার রাস্তাঘাট।

    কটিয়াদী উপজেলায় বর্তমানে দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ শূন্য। সহকারী কমিশনার (ভুমি) ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পলনে রয়েছে। ফলে তার ওপর রয়েছে বাড়তি কাজের চাপ। মাটি খেকো ও অবৈধ বালু লোটের চক্র প্রশাসনের এই দূর্বলতা কাজে লাগাচ্ছে।

    অভিযোগ রয়েছে, একদল অসাধু ব্যবসায়ী চক্র কৃষকদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে এসব মাটি কিনে পাচার করছে। যদিও প্রশাসন বলছে জমির উপরি ভাগের মাটি কাটা অবৈধ। যারা অবৈধভাবে মাটি কাটবে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান চলমান থাকবে। যদিও দিনদুপুরে মাটি কাটা ও পরিবহন হলেও কেনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না এটা প্রশ্ন রয়েছে। অতীতে কখনো পদক্ষেপ নেওয়া হলেও মূল অভিযুক্তরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। ফলে কদিন পর আগের মতোই অবস্থা চলে।

    সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চরপুক্ষিয়া এলাকায় সবচেয়ে বেশি মাটি কাটা হচ্ছে। এছাড়াও মসূয়া বৈরাগীচর, লোহাজুরী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থান, মুমুরদিয়া ইউনিয়ন, আচমিতা, বনগ্রাম ইউনিয়নের কিছু স্থানে মাটি কাটা হচ্ছে। উল্লিখিত স্থানের স্পটে অবাধে চলছে কৃষি জমি থেকে মাটি বিক্রি। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন জমিতে লেগে আছে ট্রাক-ট্রাক্টরের দীর্ঘ লাইন। ফসলি এসব জমি থেকে এক্সেভেটরের মাধ্যমে মাটি কেটে সেগুলো পরিবহন করা হচ্ছে ট্রাক্টরের মাধ্যমে। আর এসব মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে বসতভিটা, ইটের ভাটাতে। মাটি ব্যবসায়ীরা প্রতি ট্রাক্টর মাটি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করে সেগুলো বিক্রি করে দিচ্ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায়। আর এতে করে অধিক মুনাফা আদায় করে নিচ্ছে চক্রটি।

    কৃষি অফিসের তথ্যমতে, জমির উপরিভাগের ছয় থেকে দশ ইঞ্চিতে জৈব পদার্থ বিদ্যমান থাকে। উপরিভাগ কাটার ফলে জমির ফসল উৎপাদনের ক্ষমতা হ্রাস পায়। তাই সেগুলো কাটা অথবা বিক্রি করা যাবে না। তবুও অসাধু চক্রের ফাঁদে পড়ে সামান্য কিছু টাকার জন্য জমির উপরিভাগের মাটি কাটার অনুমতি দিচ্ছেন অনভিজ্ঞ কৃষকরা। এ বিষয়ে কৃষি অফিস থেকে কোন সচেতনতা সৃষ্টিতেও উদ্যোগ নেই।

    পরিবেশ সংরণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১২ এর ৬ ধারায়) অনুযায়ী, প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট টিলা ও পাহাড় নিধন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অন্যদিকে ১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধিত ২০০১) অনুযায়ী, কৃষি জমির টপ সয়েল বা উপরিভাগের মাটি কেটে শ্রেণি পরিবর্তন করাও সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে। দুই আইনে শাস্তির বিধান একই রকম। এসব কাজে জড়িত ব্যক্তিদের দুই লাখ টাকার জরিমানা ও দুই বছরের কারাদন্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। একই কাজ দ্বিতীয়বার করলে দায়ী ব্যক্তির ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও ১০ বছরের কারাদন্ড হবে। এ ক্ষেত্রে এ কাজের সঙ্গে জড়িত জমি ও ইটভাটার মালিক উভয়ের জন্যই সমান শাস্তির বিধান রাখা হয়।

    এমতাবস্থায় পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখতে এবং এলাকার রাস্তাঘাট রক্ষায় প্রশাসনের আরও কঠোর নজরদারি কামনা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

    এ বিষয়ে কটিয়াদী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাবনি আক্তার তারানা বলেন, ''ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা অপরাধ। যে বা যারা এই অপরাধের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি। কিছুদিন আগেও কয়েকটি অভিযান পরিচালিত হয়েছিলো। এ বিষয়ে কোন ছাড় নয়।"

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…