এইমাত্র
  • মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন ইসলামি আন্দোলনের মুফতী আবু বকর
  • গলাচিপায় ভুয়া চিকিৎসক আটক
  • নিরাপত্তা শঙ্কায় ইসির দ্বারস্থ ফুয়াদ-সিগমা
  • নারায়ণগঞ্জে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধ
  • ঈশ্বরদীতে একরাতে ৭ দোকানে চুরি
  • ভাষা মতিনের জন্মভূমির অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার
  • ব্যাটিং ব্যর্থতায় আবারও হারের দ্বারপ্রান্তে ইংল্যান্ড
  • লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে ইসলামী আন্দোলনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ
  • চট্টগ্রামে চাঁদাবাজদের তাণ্ডব, প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলিবর্ষণ
  • রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফুটবল টার্ফকে কেন্দ্র করে সংঘাতের আশঙ্কা
  • আজ বৃহস্পতিবার, ৪ পৌষ, ১৪৩২ | ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    আজ ১৮ ডিসেম্বর: নওগাঁ হানাদারমুক্ত দিবস

    আব্দুল মান্নান, নওগাঁ প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪৭ এএম
    আব্দুল মান্নান, নওগাঁ প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪৭ এএম

    আজ ১৮ ডিসেম্বর: নওগাঁ হানাদারমুক্ত দিবস

    আব্দুল মান্নান, নওগাঁ প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪৭ এএম

    নওগাঁ হানাদার মুক্ত দিবস আজ (১৮ ডিসেম্বর)। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় পাক সেনারা আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পন করলেও নওগাঁয় যুদ্ধ অব্যাহত ছিল। তারা আত্মসমর্পণ না করে ১৭ ডিসেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যায়। পরে যৌথবাহিনীর কাছে ১৮ ডিসেম্বর সকালে আত্মসমর্পণ করে প্রায় দুই হাজার পাকিস্তানি সেনা। ফলে এদিন হানাদার মুক্ত হয় নওগাঁ।

    ২৫ মার্চ পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণের শিকার হলেও নওগাঁ প্রায় এক মাস মুক্ত ছিল। তবে ২২ এপ্রিল নওগাঁ পুনরায় পাক বাহিনীর দখলে চলে যায়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়।

    ৭ নম্বর সেক্টরের আওতায় ছিল নওগাঁ, নবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, হিলি, রাজশাহী, পাবনা ও নাটোর অঞ্চল। এই সেক্টরের প্রথম অধিনায়ক ছিলেন ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন, পরবর্তীতে মেজর নাজমুল হক এবং তার মৃত্যুর পর মেজর নুরুজ্জামান দায়িত্ব পালন করেন।

    মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১১টি সেক্টর থেকে মোট ১১৪ জন যোদ্ধাকে সি অ্যান্ড সি স্পেশাল প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ভারতের দেরাদুনের কবুলিয়া নামক স্থানে এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। নওগাঁ থেকে মাত্র দু’জন কৃতি সন্তান এই দুর্লভ প্রশিক্ষণ গ্রহণের গৌরব অর্জন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল হোসেন চৌধুরী ও আখতার আহমেদ সিদ্দিকী।

    এছাড়াও স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনালগ্নেই নওগাঁর বহু ছাত্র-যুবক মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

    ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের সংবাদ পাওয়ার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল হোসেন চৌধুরী নওগাঁ আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। তার আগে নদীকুল এলাকায় তিনি গ্রুপ কমান্ডারদের ব্রিফিং দেন। তিনি জানান, নওগাঁ তখনও অবাঙালিদের নিয়ন্ত্রণে এবং সমগ্র শহর মেজর সাঈদের নেতৃত্বে শক্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সুরক্ষিত। পাঞ্জাব, বেলুচ, সিন্ধি ও পাঠান রেজিমেন্টকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছিল।

    ১৭ ডিসেম্বর শীতল সকালে বিশাল মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী নওগাঁ আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনী জগৎসিংহপুর ও খলিশাকুড়ি গ্রামে অবস্থান নিলে দুই বাহিনীর মধ্যে দূরত্ব কমে আসে। মাঝখানে ছিল শাখা যমুনা নদী। এ অবস্থায় জালাল হোসেন চৌধুরীর নির্দেশে শুরু হয় গোলাগুলি, যা রাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

    নওগাঁ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম সিরাজুল ইসলাম জানান, ১৮ ডিসেম্বর শনিবার সকালে বগুড়া থেকে অগ্রসরমান ভারতীয় বাহিনীর মেজর চন্দ্রশেখর এবং পশ্চিম দিনাজপুরের বালুরঘাট থেকে পিবি রায়ের নেতৃত্বে অগ্রসরমান মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী একযোগে নওগাঁয় প্রবেশ করে। তখন পাক হানাদার বাহিনীর আর প্রতিরোধের সক্ষমতা ছিল না।

    ফলে প্রায় দুই হাজার পাকসেনা কেডি সরকারি স্কুল, পিএম গার্লস স্কুল, সরকারি গার্লস স্কুল, পুরাতন থানা চত্বর ও এসডিও অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র ফেলে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে নতমস্তকে আত্মসমর্পণ করে। এ সময় নওগাঁর বিহারী সম্প্রদায়ের লোকজন স্বপরিবারে কেডি সরকারি স্কুলে আশ্রয় নেয়।

    তৎকালীন নওগাঁ মহকুমা প্রশাসক সৈয়দ মার্গুব মোরশেদ মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীকে স্বাগত জানান। এসডিও অফিস চত্বরে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা পতাকার প্রতি সালাম জানিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর মধ্য দিয়েই ১৮ ডিসেম্বর নওগাঁ চিরতরে হানাদারমুক্ত হয়।

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…