এইমাত্র
  • কাবায় নতুন চাবি রক্ষক শায়খ আব্দুল ওয়াহাব আল শাইবি
  • দ্বিতীয় সপ্তাহে সিঙ্গেল স্ক্রিনে ‘তুফান’র দর্শকখরা!
  • আফগানিস্তান সিরিজ স্থগিত করতে চায় বিসিবি
  • ২৫ বছরে যা পারেনি বাংলাদেশ, রশিদরা ১৪ বছরেই তা করে দেখালেন
  • ‘ভালো থাকো, আমি আর পারছি না’ ডা. অপর্ণার শেষ স্ট্যাটাস
  • ন্যায় বিচার প্রাপ্তি সাংবিধানিক অধিকার: প্রধান বিচারপতি
  • কালিহাতী সাব-রেজিস্টারের বিরুদ্ধে ব্যাপক ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ
  • ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার সূচি পরিবর্তন
  • কালিহাতীতে সাব-রেজিস্ট্রারেরর অপসারণ দাবি
  • নরসিংদীতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন জল্লাদ শাহজাহান
  • আজ বুধবার, ১২ আষাঢ়, ১৪৩১ | ২৬ জুন, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    ফুলবাড়ীতে পৃথক পৃথক স্থানে গঁঙ্গা পূজা ও দশহরা মেলা

    অনিল চন্দ্র রায়, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৪, ০৩:১৬ পিএম
    অনিল চন্দ্র রায়, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৪, ০৩:১৬ পিএম

    ফুলবাড়ীতে পৃথক পৃথক স্থানে গঁঙ্গা পূজা ও দশহরা মেলা

    অনিল চন্দ্র রায়, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৪, ০৩:১৬ পিএম

    কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে দেড়শো বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী গঁঙ্গা পূজা ও দশহরা মেলায় শতশত পূন্যার্থীর ঢলে মূখরিত মন্দির প্রাঙ্গণ। অন্যান্য মেলার মত প্রায় দেড়শো বছর ধরে পালিত হয়ে আসা এই মেলাতে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই দুর-দুরান্তর থেকে আসা শতশত দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছে।

    রবিবার (১৬জুন) সকাল ৮টা থেকে এ মেলা বিকাল ৩টা পর্যন্ত উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষ্ণানন্দ বকশি এলাকার বারোমাসি নদীর পাড়ে, বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্বধনীরাম ও শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের সোনাইকাজী এলাকার শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর দক্ষিণ তীরে পালিত হয়েছে।

    মেলায় এসে ধরলা নদীতে স্নান অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ছিল দা, বটি, কাঠারি ও সব ধরনের হাতিয়ারসহ গৃহকর্মে ব্যবহৃত জিনিসপত্র। এছাড়াও উড়ুন, গাইন, লাঙ্গল, জোয়াল, ঝাপি, ডালি, কুলা, ডুলি, ঝাড়ু, হাতপাখাসহ সস্তায় কৃষি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদী ও মৃৎপাত্রের বিভিন্ন বাহারি তৈষজপত্র, বর্ষার বিভিন্ন ফল, বড়মাছের শুটকিসহ বিভিন্ন জাতের বড় মাছ, বাতাসা, মুড়ি, মিষ্টি -জিলাপী, বেলুনসহ শিশুদের বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার সামগ্রী। মেলা প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে এভাবেই অনুষ্টিত হয়ে আসছে।

    দেড়শো বছর আগে মেলার নামে মৃত শরৎ চন্দ্র রায় এক একর জমি দান করেন। শুরুতে নিজস্ব জমিতে পুজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসতো। ধরলার ভাঙ্গণ ও গতিপথ বারবার পরিবর্তন হওয়ায় বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন উপজেলার দুই-তিন স্থানে প্রতি বছরই গঁঙ্গা পূজা ও দশহরা মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

    শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর পাড়ে মেলায় আগত পুরোহিত বাবলু চন্দ্র ভৌমিক ও বারোমাসিয়া তীরে গঁঙ্গার পুরোহিত বিপ্লব চক্রবর্তী জানান, প্রতি বছরের ন্যায় মহা দশমীতে এখানে গঁঙ্গা স্নান সেরে পূর্নার্থীরা পাপ মুক্ত হন।

    লালমনিরহাট সদরের থানা পাড়া থেকে স্নান করতে আসা পুন্যার্থী প্রভাতী রায় ও ফুলবাড়ী উপজেলার চন্দ্রখানা থেকে পূন্যার্থী বিরেন্দ্র নাথ রায় বলেন, আমরা প্রতি বছর গঙ্গা স্নান করতে ধরলার পারে এসে স্নান ও পুষ্পাঞ্জলি দিতে এখানে আসি। এই দুই পুন্যার্থী নিজের এবং পরিবারের পাপ মুক্ত হওয়ার পাশাপাশি দেশ ও জাতির কল্যাণে প্রার্থনা জানান।

    নাওডাঙ্গা এলাকার দশহরা মেলার স্নান ও পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিমাই চন্দ্র শীল জানান, দীর্ঘ ৪০ বছর পর হারানো ঐতিহ্য ফিরে এনেছি। এ বছর ছোট আকারে বারোমাসিয়া নদীর পাড়ে গঙ্গা পূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখন থেকে আমরা প্রতি বছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে শ্রী শ্রী গঙ্গা পূজা ও দশহারা মেলার আয়োজন করা হবে।

    শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর দশহরা পূজা কমিটির সভাপতি হরিকান্ত চন্দ্র রায় জানান, ঐতিহ্যবাহী গঁঙ্গা পূজা ও দশহরা মেলাটি প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো। আমাদের বাপ-দাদার আমল থেকে দেখে আসছি। আমরাও আনদীর পাড়ে মাদের বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখলেও বর্তমানে বিভিন্ন কারণে গঁঙ্গা পূজা ও দশহরা মেলাটির জৌলুস হারাতে বসেছে।

    উল্লেখ্য, সূর্য বংশীয় রাজা দশরত দশমীতে পাপ মোচনের জন্য গঙ্গা নদীতে স্নান সেরে পূজা দিয়ে নিষ্পাপ হয়ে বাড়ি ফিরে আসতেন। এরই অনুকরণে বাংলা ১২৫০ সালে গঙ্গার শাখা নদী ধরলায় পাপ মোচনের জন্য গঙ্গা পূজা করে হিন্দুধর্মলম্বীরা দশমী তিথিতে নিষ্পাপ হয়ে বাড়ি ফিরেন। স্নান অনুষ্ঠানের পাশাপাশি এখানে এদিন গীতাপাঠ, ভগবত আলোচনা, উপবাস এবং সর্বশেষ প্রসাদ বিতরণের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। এমেলায় এসে ধরলায় ডুবে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা এদিন বন্ধু বা সই পাতান।

    বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের ফুলবাড়ী উপজেলা শাখার সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভপতি সুনীল চন্দ্র রায় সরকার জানান, উৎসব মূখর পরিবেশে দেড়শো বছরের পুরনো গঁঙ্গা পুজা ও দশহরা মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ মেলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে শতশত পূন্যার্থীরা এসে গঁঙ্গা স্নানে অংশ নিয়ে পাপ মোচনের জন্য প্রার্থনা করেন। প্রার্থনা শেষে পূজা কমিটির লোকজন দুর-দুরান্তের পূন্যার্থীদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করেন। গত বছর এ উপজেলার দুইটি স্থানে গঙ্গা পূজা ও দশহরা মেলা অনুষ্ঠিত হলেও এ বছর নতুন করে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নে গঙ্গা পূজা ও দশহারা মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে গঙ্গা পূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

    পিএম

    ট্যাগ :

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…