টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মো. খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেলের বিরুদ্ধে ব্যাপক ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে তার প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা দলিল লেখক কল্যাণ সমিতি। এসময় সাব-রেজিস্ট্রার মো. খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেলের পক্ষে কর্মচারী আরতি রানীর ১২ লাখ টাকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্বপক্ষে বক্তব্য নিতে গেলে সাব রেজিস্টার খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেল সকল দরজাগুলো বন্ধ করে দিতে বলেন। এতে ডিবিসি টেলিভিশনের টাঙ্গাইলের নিজস্ব প্রতিবেদক সোহেল তালুকদার ও ক্যামেরা পার্সন আশিকুর রহমান অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (২৬ জুন) দুপুরে কালিহাতী উপজেলা সাব রেজিস্টার এর কার্যালয়ের এজলাস কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কালিহাতীতে কর্মরত সকল সাংবাদিক কালিহাতী প্রেসক্লাব ও কালিহাতী রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যরা একাত্মতা ঘোষণা করে অবস্থান নেন।
ডিভিসি টেলিভিশনের টাঙ্গাইলের নিজস্ব প্রতিবেদক সোহেল তালুকদার বলেন, আরতি রানীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে তার স্বপক্ষে বক্তব্য নেয়ার জন্য গেলে সাব রেজিস্টার খাইরুল বাশার ভূইয়া পাভেল উত্তেজিত হয়ে বলেন , আপনি এখানে প্রবেশ করেছেন কেন? মন্ত্রনালয়ের লিখিত অনুমতি নিয়ে আপনি এখানে প্রবেশ করবেন। তখন আমি জানাই আমি এখানে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে এসেছি। তখন আবারও তিনি বলেন মন্ত্রনালয়ের অনুমতি পত্র ছাড়া প্রবেশ করা নিষেধ। আপনার দ্বারা দলিল চুরি ও রাষ্ট্রের ক্ষতি সাধন হতে পারে বলে হুমকি দেন এবং কর্মচারীদের গেইট বন্ধ করার নির্দেশ দেন। পরে তার নির্দেশ মোতাবেক কর্মচারীরা গেইট বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে আমি এবং আমার ক্যামেরা পার্সন অবরুদ্ধ হয়ে পড়ি। কিছুক্ষণ পরে গেইট খুলে দেন তখন আমি জানাই এঘটনায় সাংবাদিকদের নিকট সাব রেজিস্টার প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে অথবা আমি যদি কোন অপরাধ করে থাকি তাহলে আমার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত ঘটনাস্থলত্যাগ করছি না। এসময় আমার সাথে পরবর্তীতে কালিহাতী উপজেলার সংকর্মীরাও অবস্থান নেয়।
কালিহাতী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মুশফিকুর মিল্টন এ বিষয়ে বলেন, চরম দুর্নীতিবাজ সাব রেজিস্টার খাইরুল বাশার ভূইয়া পাভেল ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত এবং তার শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
পরে বিকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এ্যডভোকেট জাফর আহমেদের পরামর্শক্রমে কালিহাতী প্রেসক্লাবের সভাপতি রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত ও টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য মামুনুর রহমান মিয়া কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন এবং পরবর্তীতে প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান।
এর আগে দুপুর ১২ টায় নিজস্ব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন কালিহাতী দলিল লেখক কল্যাণ সমিতি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম সরকার। আরও বক্তব্য রাখেন, সাবেক সভাপতি ইমান আলী, সহ-সভাপতি শাজাহান মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মাসুম সরকার, দলিল লেখক রাম প্রসাদ বসু ও আব্দুল করিম প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, কালিহাতী উপজেলা সাব-রেজিস্টার মো. খায়রুল বাশার ভূঁইয়া পাভেল কালিহাতী উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদানের পর থেকে দাতা-গ্রহীতাদের প্রতিটি দলিল রেজিস্ট্রিতে সরকারি উৎসে করের সমপরিমাণ অর্থ দাবি করছে। ওই পরিমাণ অর্থ না দিলে তিনি কোন দলিল রেজিস্ট্রি করেন না। এজন্য উপজেলায় বিভিন্ন প্রকার দলিল রেজিস্ট্রির হার অর্ধেকে নেমে এসেছে। এছাড়া তিনি দলিল লেখক এবং দাতা গ্রহীতাদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন। তার আচরণে ভদ্রতা-সভ্যতার লেশমাত্র নেই। তিনি প্রকাশ্যে দলিল প্রতি অর্থ দাবি করেন। অন্যথায় দলিল সম্পাদন বন্ধ রাখেন।
পিএম