নোয়াখালীতে পুরুষের চেয়ে নারী বেশি, তালাকেও এগিয়ে নারীরা। অবিবাহিত নারীর চেয়ে পুরুষ বেশি। জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর নোয়াখালী জেলা রিপোর্টের তথ্যে দেখা গেছে জেলায় কমলো একান্নবর্তী পরিবারের সংখ্যা। এখনো বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসেনি দেড় শতাংশ মানুষ।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে নিজ সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান রিপোর্টটি প্রকাশ করেন।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ হচ্ছে বাংলাদেশের জনসংখ্যার বিস্তারিত গণনার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত দেশের ষষ্ঠ জাতীয় জনশুমারি। এটিই দেশের প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি। নোয়াখালীতে পুরুষের চেয়ে নারী বেশি, তালাকেও এগিয়ে নারীরা। অবিবাহিত নারীর চেয়ে পুরুষ বেশি। এ ছাড়া কমেছে একান্নবর্তী পরিবারের সংখ্যা। এই তথ্য উপাত্ত জেলার বিভিন্ন উন্নয়নের প্রয়োজনে কাজে লাগবে। বিশেষ করে স্যানিটেশন, জ্বালানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর রিপোর্ট অনুযায়ী, নোয়াখালী জেলায় মোট জনসংখ্যা ৩৬ লাখ ২৫ হাজার ৪৪২ জন। এদের মধ্যে ৪৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ পুরুষ ও ৫২ দশমিক ২৫ শতাংশ নারী। জেলায় সর্বাধিক জনসংখ্যা নোয়াখালী সদরে এবং সবচেয়ে কম জনসংখ্যা কবিরহাট উপজেলায়। নোয়াখালী জেলায় ২০২২ সালে জনসংখ্যার বার্ষিক গড় বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ, ২০১১ সালে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ছিল ১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। জেলায় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ৯৮৪ জন। জেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সংখ্যা মোট ১ হাজার ৪ জন।
রিপোর্টে আরও রয়েছে, নোয়াখালী জেলায় মোট জনসংখ্যার ৯৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ মুসলমান, ৪ দশমিক ০৬ শতাংশ হিন্দু, শূন্য দশমিক ০৩ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং শূন্য দশমিক ০২ শতাংশ বৌদ্ধ। নোয়াখালী জেলায় ৭ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী জনসংখ্যার সাক্ষরতার হার ৭৫ দশমিক ৫২ শতাংশ (নারী ৭৫ দশমিক ৪১ শতাংশ ও পুরুষ ৭৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ)।
জেলায় মোট জনসংখ্যার ৪৬ দশমিক ৩১ শতাংশ সেবা, ৪১ দশমিক ৬৭ শতাংশ কৃষি ও ১২ দশমিক ০২ শতাংশ মানুষ শিল্পখাতে নিয়োজিত রয়েছে। জেলার ৭০ দশমিক ৬৯ শতাংশ মানুষের কাছে নিজস্ব ব্যবহারের জন্য মোবাইল ফোন রয়েছে। তন্মধ্যে ৪৩ দশমিক ০১ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
সারা দেশের ন্যায় নোয়াখালী জেলায়ও একান্নবর্তী পরিবারের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। জেলায় মোট একান্নবর্তী পরিবারের হার ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ, যেখানে ২০১১ সালে একান্নবর্তী পরিবারের হার ছিল ৫ দশমিক ২০ শতাংশ। নোয়াখালী জেলায় পাকা বাসগৃহের হার ১৯ দশমিক ০১ শতাংশ, আধাপাকা বাসগৃহের হার ৯ দশমিক ১১ শতাংশ, কাঁচা বাসগৃহের হার ৭০ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং ঝুপড়ি শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ। জেলার ৯৮ দশমিক ৫২ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছেন। তবে ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ মানুষ এখনো বিদ্যুৎ সুবিধার বাইরে রয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন আরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান, জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) হারুন অর রশিদ, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ভূঁইয়া, নোয়াখালী জেলা শিক্ষা অফিসার নূর উদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর, নোয়াখালী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ কাজী রফিক উল্যাহ, নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি বখতিয়ার শিকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের মঞ্জু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমআর