কুড়িগ্রামের উলিপুরে উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমায় নদী-নদীর পানি কমেছে। তবে নদ-নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন তীব্র আকার ধারণকরেছে।
শনিবার (২৯ জুন) সকালে ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত দূর্গম চরাঞ্চলে সাহেবের আলগা ইউনিয়নের দৈই খাওয়া চরে আবাসন প্রকল্পের দুইটি ঘরের আংশিক ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে চলে গেছে। যেকোনো মহুর্তে বিলীন হয়ে যেতে পুরো আবাসান এলাকাটি। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে পূর্ব দৈই খাওয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিজিবি ক্যাম্পসহ কয়েক শতাধিক বাড়ীঘর ও আবাদী জমি। ভাঙন কবলিত মানুষজন আবাসন প্রকল্পটিসহ বসতবাড়ী ও ফসলী রক্ষায় স্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থার দাবী জানান।
এ দিকে তিস্তা নদীর পানি কমার সাথে সাথে গত ২ সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ মিটার বাঁধের রাস্তা, শতাধিক বিঘা আবাদি জমি এবং অর্ধ শতাধিক বাড়ীঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যেকোনো মহুর্তে বিলীন হয়ে যাবে একটি সুইস গেট ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভাঙনের মুখে মুখে রয়েছে মসজিদ, দুই শতাধিক বসতভিটা ও ফসলি জমি।
সরেজমিন তিস্তা নদীর পাড় ঘুরে দেখা যায়, বজরা ইউনিয়নের সাদুয়া দামার হাট ও খামার দামার হাট গ্রামের ভাঙন কবলিতদের নিজস্ব জমি জমা না থাকায় বাড়িঘর স্থানান্তর করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ঈদুল আজহার এক সপ্তাহের আগে থেকেই এই এলাকায় ভাঙন শুরু হলে বজরা ১নং খামার দামার হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সুইস গেট হুমকির মুখে পড়ে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ না নিলে যেকোনো মুহূর্তে স্কুল ও সুইস গেটটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে ৫০ মিটার বাঁধের রাস্তা, অর্ধশত বসতবাড়ী, সবজিক্ষেত, পাট ক্ষেতে, গাছপালা-পুকুরসহ শত বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। আর এসব ভাঙন কবলিত এলাকায় এলাকাবাসী গাছের ডালপালা, বাঁশ ও বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বজরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম সরদার বলেন, আমার এই বয়সে ১২বার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছি। আমি ১৫০ একর জমির মালিক ছিলাম। অথচ আজ আমাদের মাথা গোঁজার মতো নিজস্ব কোনো জায়গা জমি নেই। সর্বনাশা তিস্তা নদী আমাদের নিঃস্ব করেছে। বাধ্য হয়ে অন্যের জমি ৮ বছরের জন্য লিজ নিয়ে বাড়ী-ঘর করে পরিবার পরিজন নিয়ে আছি।
সাহেবের আলগা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাফর হোসেন বলেন, পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। শনিবার (২৯ জুন) সকালে ইতোমধ্যে দৈই খাওয়া চরে আবাসন প্রকল্পের দুইটি ঘর ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে। প্রকল্পটিসহ এলাকার ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোহিতা কামানা করেন।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান বলেন, সম্প্রতি ভাঙন কবলিত এলাকা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন করেছেন। ইতোমধ্যে সাহেবের আলগা ইউনিয়নে বিজিবি ক্যাম্পের পাশে জিও ব্যাগ ডাম্পিং কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়াও ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এইচএ