এইমাত্র
  • আ’লীগের দোসর প্রশাসনে রেখে সংস্কার সম্ভব নয়: রিজভী
  • গোপালগঞ্জে শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনে পুলিশের বাধা
  • শিক্ষা কমিশনে আস্তিকদের বসাতে হবে: জামায়াত আমির
  • টাইগার রবিকে নিয়ে কড়া সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ভারত!
  • অবশেষে কমল সোনার দাম
  • টাইব্রেকারে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ
  • শেখ হাসিনার প্রেতাত্মারা শিল্পখাতকে অস্থির করছে: মির্জা ফখরুল
  • কিশোরগঞ্জে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত
  • নাটোরে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
  • নির্বাচন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা
  • আজ রবিবার, ১৩ আশ্বিন, ১৪৩১ | ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
    রাজনীতি

    তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করতে যা যা লাগে সব করেছে শেখ হাসিনা: মামুনুল হক

    মির্জা হৃদয় সাগর, নেত্রকোনা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম
    মির্জা হৃদয় সাগর, নেত্রকোনা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম

    তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করতে যা যা লাগে সব করেছে শেখ হাসিনা: মামুনুল হক

    মির্জা হৃদয় সাগর, নেত্রকোনা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৬ পিএম

    বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করতে যা যা করা লাগে তার সবই করেছেন শেখ হাসিনা। এমন অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক।

    শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া মাঠে বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিসের ‘ছাত্র জনতার বিপ্লবের সংঘটিত গণহত্যার বিচার ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে গণ সমাবেশ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতি করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নেত্রকোনা জেলা শাখার সভাপতি, শাইখুল হাদীস আল্লামা জিয়া উদ্দিন দা. বা.।

    আল্লামা মামুনুল হক বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার কিছুদিনের মধ্যেই বিজয়কে ছিনতাই করা হয়েছিল। ঠিক একইভাবে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট এর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল, আজ সেই স্বাধীনতাকেও সে পরাজিত শক্তির দোসররা, ইসলাম বিদ্বেষী করার চেষ্টা করছে।

    শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনীতি করেছিল। তার প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল দুটি। প্রথমত সে প্রতিশোধের রাজনীতি করেছিল। সে প্রতিশোধ নিয়েছে মানুষের কাছ থেকে। সে প্রতিশোধ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশের জনগণের কাছ থেকে। শেখ হাসিনা প্রতিশোধ গ্রহণ করেছে রাষ্ট্রের কাছ থেকে। এই দেশটাকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করতে যা যা করা লাগে তিনি করেছেন। শেখ হাসিনা শুধু এই দেশের মানুষের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। তিনি তার দল আওয়ামী লীগ থেকেও প্রতিশোধ গ্রহণ করেছে।

    তিনি আরো বলেন, স্বৈরশাসক হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ গ্রেপ্তার হয়েছেন, কারাগার বরণ করেছেন, কিন্তু দলের নেতাকর্মীদের ছেড়ে পালিয়ে যাননি। বেগম খালেদা জিয়া একাধিকবার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু তিনিও দেশ ছেড়ে পালাননি। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েও তিনি বছরের পর বছর অসুস্থ অবস্থায় নেতা কর্মীদের পাশে ছিলেন। ইতিহাস প্রমাণ করে, যে দেশের মানুষ হাসিমুখে প্রাণ দিতে জানে, যারা নিজেরা বাঁচতে শিখে তাদেরকে কেউ মারতে পারে না, শেখ হাসিনাও মারতে পারে নাই।

    শেখ হাসিনাকে নিজের তল্পিতল্পাসহ বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এই পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা ঐতিহ্যবাহী এই দলটিকে সারা দেশের মানুষের সামনে কলঙ্কিত করে তুলেছে। শেখ হাসিনা জানতো ১৫ই আগস্ট তার বাবাকে হত্যা করার জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী। তিনি পঞ্চাশ বছর ধরে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নাটক সাজিয়েছিলেন যেন আওয়ামী লীগ আর বাংলাদেশের কোনদিন রাজনীতি করতে না পারে।

    কাজেই আওয়ামী লীগে যদি কোন রাজনীতিবিদ থেকে থাকেন, আপনাদের যদি বাংলাদেশের রাষ্ট্র রাজনীতি নিয়ে কোন কাজ করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে আপনাদেরকে আমি দুইটা পরামর্শ দিব। এক নম্বর পরামর্শ, আপনাদের বড় অপরাধ হয়েছে যে এরকম একজন মানসিক বৈকল্যর স্বীকার মানুষকে এই জাতির উপর আপনারা বছরের উপর বছর চাপিয়ে রেখেছেন। এটা আপনাদের মস্ত বড় অপরাধ হয়েছে, এই জন্য আপনাদের তওবা করা দরকার। আর একটা পরামর্শ থাকবে, এই নামটা পরিবর্তন করে ফেলেন। কারণ এই লীগ নামে যা কিছু হয় সবকিছুই আস্তে আস্তে ক্ষয় হয়ে যায়। এত হত্যার দাগ নিয়ে, এত রক্তের দাগ নিয়ে এই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের সামনে আসতে পারবে না।

    মামুনুল হক আরো বলেন, সংখ্যালঘুদের উপর আওয়ামীলীগ যে নির্যাতন নির্যাতন চালিয়েছে তার নজির ইতিহাসে পাওয়া কঠিন। আওয়ামী লীগ যেটা করত, রাতের আঁধারে কালনাগিনী হয়ে সংখ্যালঘুদের ছোবল মারতো। আর দিনের আলোতে তারাই আবার ওঝা হয়ে ঝাড়তে আসতো। এইভাবে নাটক সাজিয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতন চালিয়ে, তাদের বাড়িঘর দখল করে, তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করে। আবার তারা মায়া কান্না করে সংখ্যালঘুদের সহানুভূতি অর্জন করে তা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। এখন বাংলাদেশে শেখ হাসিনাও নাই, আওয়ামী লীগের রাজনীতিও নাই, সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনাও নাই।

    অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে মামুনুল হক বলেন, প্রথম দিন থেকেই আমরা আপনাদের সহযোগিতা করছি, এখনো করছি এবং ভবিষ্যতেও করবো এ ধরনের ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। তবে সরকারকে আমাদের কাছ থেকে সহযোগিতা নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের আন্তরিকতার পরিচয় দিতে হবে। দেশের মানুষের প্রশ্নে, দেশের মানুষের স্বার্থের প্রশ্নে, দেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে, ইসলামের প্রশ্নে কারো চেহারা দিকে তাকিয়ে কথা বলার ফুসরত আমাদের নাই।

    দেশের আইনে বেশ কিছু বিষয়কে অন্তর্ভুক্তি করার পায়তারা চলছে। তার মধ্যে একটা হল ট্রান্সজেন্ডার। সমকামিতাসহ পশ্চিমা অসভ্যতা ট্রান্সজেন্ডার এর নামে আমার বাংলাদেশে যদি আমদানি করার পায়তারা করা হয়, বুকের রক্ত দিয়ে আমরা প্রতিহত করব ইনশাল্লাহ। আরেকটি হচ্ছে, বৈবাহিক ধর্ষণের নামে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে স্বামী-স্ত্রীদের সম্পর্কটাকে একটা বিতৃষ্ণ সম্পর্কে এবং ঘরে ঘরে অশান্তির দাবানল জ্বালিয়ে দেওয়ার পয়তারা চলছে। এই বিষয়গুলোকে মানবতা বিরোধী অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করে, আল্লাহ প্রদত্ত স্বামীর অধিকারকে জলাঞ্জলি দিয়ে ঘরে ঘরে দাম্পত্যের আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। পশ্চিমা বিশ্বের পারিবারিক ব্যবস্থা ভেঙে খানখান হয়ে গিয়েছে। এখন তারা চায় মুসলিম বিশ্বের পরিবার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিতে।

    ভারতে নবীকে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদ করে মামুনুল হক বলেন, প্রয়োজনে ভারতের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করুন। ওরা আপনার নবীকে গালি দিবে, আর আপনারা তাদের ইলিশ মাছ পাঠাবেন, এদেশের মানুষ সেটাকে ভালো চোখে দেখে না।

    যদি আমরা সত্যিকার অর্থেই ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ গড়তে চাই। বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চাই তাহলে আল্লাহর জমিনে মানব রচিত তন্ত্র-মন্ত্র দিয়ে সেটা সম্ভব হবে না। পূর্ণাঙ্গ ইনসাফ ভিত্তিক বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চাইলে এই জমিনে আল্লাহ প্রদত্ত রাজনৈতিক বন্দোবস্তু খেলাফতের রাজনীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।

    এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমাদ। মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসনাত জালালী, সহ-বায়তুল মাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমানসহ জেলার উপজেলা থেকে আগত নেতারা।

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…