অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ। আজ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস, নাকি রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প—কে পাচ্ছেন হোয়াইট হাউসের টিকিট, তা নির্ধারণে ভোট দেবেন মার্কিন নাগরিকেরা। দিনভর চলবে রিপাবলিকান প্রতীক হাতি ও ডেমোক্রেটিক প্রতীক গাধার লড়াই। জনমত জরিপ অনুযায়ী, দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে এবার।
নানা জরিপের ফল বলছে, দুজনের লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। নির্বাচনে জয়–পরাজয় ঠিক করে দিতে পারে দোদুল্যমান সাত অঙ্গরাজ্য। মূলত ‘সুইং স্টেট’ অঙ্গরাজ্যগুলোর ভোটের ফলাফলের ওপরই নির্ভর করবে কমালা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়-পরাজয়। তাই শেষ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের 'সুইং স্টেট' বা দোদুল্যমান রাজ্যগুলো চষে বেড়িয়েছিলেন দুই প্রার্থী- ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমালা হ্যারিস।ইতোমধ্যেই ৮ কোটি ১০ লাখেরও বেশি আগাম ভোট পড়েছে। তবে সুইং স্টেট’ — যেগুলো সাধারণত কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পক্ষে থাকে না, বরং এই নির্বাচনে যেকোনও দিকে যেতে পারে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। তবে ভোটগ্রহণ শুরুর সময়কাল প্রতিটি অঙ্গরাজ্যেই ভিন্ন ভিন্ন। আর এরপরই মিলবে চূড়ান্ত ফল।
যুক্তরাষ্ট্রে ৫০টি স্টেটে একসঙ্গে ভোট হলেও মূলত সবারই নজর থাকে সুইং স্টেটের দিকে। বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যেই কে এগিয়ে, সেটি সমর্থনের ভিত্তিতে ও জরিপের মাধ্যম আগেভাগে ধারণা করা যায়। কিন্তু সুইং স্টেটগুলোতে তা অনুমান করা কঠিন। হোয়াইট হাউসে জয়ী হওয়ার জন্য কে ২৭০টি ইলেক্টোরাল ভোট পাবে- তা নির্ধারণ করবে এই সাতটি সুইং স্টেট। এই স্টেটগুলোর মোট ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট সংখ্যা ৯৩। সাতটি স্টেটকে সুইং বলা হচ্ছে। সেগুলো হলো অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিন।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে স্থানীয় সময় ৫ নভেম্বর রাত বা ৬ নভেম্বর দিনের মধ্যে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল জানা যাবে। তবে ঝামেলা হলে চূড়ান্ত ফল জানতে কয়েক দিন লাগতে পারে। যেমন ২০২০ সালের নির্বাচনে চার দিন পর চূড়ান্ত ফল জানা গিয়েছিল।
ভোটাররা মূলত ইলেকটোরাল কলেজ নির্বাচিত করবেন। আগামী ১৭ ডিসেম্বর তাঁদের ভোটে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। যুক্তরাষ্ট্রে মোট ইলেকটোরাল কলেজের ভোটের সংখ্যা ৫৩৮। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে একজন প্রার্থীকে ২৭০টি ভোট পেতে হয়। এই ভোট আবার ২০২৫ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে গণনা করা হবে। সেদিন আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত হবেন নতুন প্রেসিডেন্ট। এরপর ২০ জানুয়ারি শপথ নিয়ে পাকাপাকিভাবে হোয়াইট হাউসে বসবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্য বছরের পর বছর একই দলকে ভোট দিয়ে এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯২ সাল থেকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্যালিফোর্নিয়ায় ডেমোক্র্যাটরা জিতে এসেছে। ১৯৮০ সাল থেকে মিসিসিপি জিতেছে রিপাবলিকানরা।
অন্যদিকে সুইং স্টেটগুলো কখনও ডেমোক্র্যাট, কখনও রিপাবলিকান প্রার্থীদের নির্বাচিত করে। এই রাজ্যগুলোতে প্রার্থীরা ভোটের জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালান, কারণ এই রাজ্যগুলোই শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের ফল নির্ধারণ করতে ভূমিকা রাখে।
এবি