এইমাত্র
  • ময়মনসিংহে ধান ক্ষেতে পড়ে ছিল লক্ষীপুরের ইউপি সদস্যের লাশ
  • নওগাঁয় বাস উল্টে স্বাস্থ্যকর্মীসহ নিহত ২
  • পাত্র খোঁজা হচ্ছে মনের মতো পাত্র পেলে বিয়ে করব: আজমেরী হক বাঁধন
  • ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে ডিসেম্বরে
  • অশ্বিনকে টপকে আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে বুমরাহর ইতিহাস
  • ভার্জিনিয়ায় দেড় শতাধিক বিস্ফোরক উদ্ধার, রেকর্ড এফবিআইয়ের
  • ফরাসি সেনাবাহিনীকে দেশ ছাড়তে বললো আইভরি কোস্ট
  • কিয়েভে রাশিয়ার হামলা, পাল্টা আক্রমণ ইউক্রেনের
  • ‘সংস্কার নয়, ছাত্র-জনতার দাবির উপযোগী সংবিধান লিখতে হবে’
  • দক্ষিণ কোরিয়ায় প্লেন দুর্ঘটনা : ব্ল্যাক বক্স থেকে ডেটা উদ্ধার
  • আজ বুধবার, ১৮ পৌষ, ১৪৩১ | ১ জানুয়ারি, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে চাল, বাজার স্বাভাবিক

    মো. জামাল হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৬ পিএম
    মো. জামাল হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৬ পিএম

    ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে চাল, বাজার স্বাভাবিক

    মো. জামাল হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৬ পিএম

    ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত চার হাজার ৫০০ মেট্রিকটন চাল আসলেও বেনাপোলসহ যশোরের বাজারে কোনো প্রভাব নেই। স্থানীয় বাজারে চালের দামতো কমেনি, বরং দু’এক টাকা বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আপাতত চালের দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ফলে কৃষকের ঘরে আমন ধান উঠলেও অসংখ্য মানুষকে বেশি দামেই চাল কিনে খেতে হচ্ছে।

    ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের দাম এমন জায়গায় গেছে যে, ইতিপূর্বে যেসব ক্রেতা চিকন চাল কিনতেন তারা এখন বাধ্য হচ্ছেন মোটা চাল কিনতে। এক প্রকার জোর করে অভ্যাস পরিবর্তন করতে হচ্ছে তাদের।

    সরকার ভারত থেকে চালে শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার পর ১৭ নভেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর এক মাসে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে চার হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। যদিও অনুমোদন দেয়া হয় তিন লাখ ৯২ হাজার মেট্রিকটন চাল আমদানির। এরপর ১৭ নভেম্বর থেকে আবার চাল আমদানি শুরু হয়। ১২ ডিসেম্বর ছিল আমদানির শেষ দিন। পরে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ায় সরকার। তবে বাকি কয়েকদিন কি পরিমাণ চাল ভারত থেকে আমদানি হবে সেটা এখনই কেউ বলতে পারছে না।

    বেনাপোল চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আবু তাহের জানান, মাহবুবুল আলম ফুড প্রডাক্ট, অর্ক ট্রেডিং, সর্দার এন্টারপ্রাইজসহ ৮টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বেনাপোল বন্দর দিয়ে এ চাল আমদানি করেছে। ১৭ নভেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত চার হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল এসেছে। এ পর্বে বেসরকারিভাবে চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয় ৯২টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে। এতে দু’লাখ ৭৩ হাজার মেট্রিকটন সিদ্ধ চাল এবং এক লাখ ১৯ হাজার মেট্রিকটন আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। অনেক প্রতিষ্ঠান এই স্বল্প সময়ের মধ্যে চাল আমদানি করতে পারেনি। সরকার মাত্র ২৫ দিন সময় নির্ধারণ করে দেয় আমদানিকৃত চাল বাজারজাত করার জন্য। পরে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ায় সরকার।

    যশোরের চাল আমদানিকারক মাহবুব আলম বলেন, ধীরগতিতে চলছে চাল আমদানি। সরকার প্রথমে ১৭ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র ২৩ দিন সময় বেঁধে দেয় ৩ লাখ ৯২ হাজার টন চাল আমদানির। পরে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ায় সরকার। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে চাল ভারত থেকে আমদানি হলে শিগগিরই হয়তো চালের দাম কমে আসবে।

    চলতি মৌসুমে ধানের দাম বেশি, যে কারণে কমছে না চালের দাম-এমনটাই বলছেন অটোরাইস মিল মালিক ও ধান ব্যবসায়ীরা। আমদানিকারকদের মতে, ভারতে চালের দাম বেশি, এ কারণে আমদানিকৃত চাল কম দামে বাজারে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। ভরা মৌসুমেও কম দামে চাল না কিনতে পেরে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। সীমান্ত অঞ্চলে শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে ওঠায় চালের মূল্য কমছে না বলে মনে করছেন সাধারণ ক্রেতারা। বিশেষ করে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে নজরদারির ব্যবস্থা না থাকায় মূল্য কমছে না বলে মত তাদের।

    যশোরের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সিংহভাগ ধানের উৎপাদন হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে এই অঞ্চলে ২১ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। বেশির ভাগ ধান ঘরে উঠে গেছে। এবার ধানের বাজার চড়া। ১৩৫০ থেকে ১৪৫০ টাকা মনে দাম পাচ্ছেন কৃষক। এ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি অটোরাইস মিল ঘুরে দেখা যায়, এখনো ধান কিনতে পারেননি মিল মালিকরা। কৃষকেরা তাদের ধান বাজারজাত করতে পারেননি এখনো। তবে মিল মালিকরা অন্য জেলা থেকে ৩২-৩৪ টাকা কেজি দরে ধান কিনছেন। এসব ধান থেকে চাল প্রস্তুুত করতে দাম পড়ছে ৫২ টাকা।

    এদিকে, শুল্কমুক্ত চাল বাজারে আসলেও দামে কোনো প্রভাব পড়েনি বলে বেনাপোলসহ আশেপাশের বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন। এই বাজারের অন্যতম পাইকারি ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন বর্তমানে মোটা চাল ৫২, হীরা চাল ৪৮, উনপঞ্চাশ চাল ৫৬, আঠাশ চাল ৫৮-৬০, মিনিকেট ৬৪-৬৮, তেষট্টি চাল ৬৮-৭০, বাসমতি ৮০-৮৬ ও নাজিরশাইল ৮০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে সব ধরনের চাল বিক্রি হচ্ছে দু’ তিন টাকা বেশিতে। আমন ধান উঠে গেলেও দাম কমেনি বললেই চলে।

    ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে আমদানি করা মোটা চাল বন্দর থেকে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৩ টাকায়। ওই চাল পাইকাররা ৫৪ টাকায় বিক্রি করছেন। আর খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকায়। আর ভারতীয় টেন চাল ৫৮ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। পাইকাররা বলছেন, বেনাপোল বন্দর দিয়ে হাজার হাজার মেট্রিকটন চাল আমদানি হলেও বেনাপোলসহ আশেপাশের বাজারের খুচরা ক্রেতারা তার কোনো সুফল পাচ্ছে না। সবমিলিয়ে হতাশার মধ্যে দিন পার করছেন বিভিন্ন পর্যায়ের ভোক্তারা।

    বেনাপোল বাজারে চাল কিনতে আসা শহিদুল আলম বলেন, এখন ধানের মৌসুম, আবার ভারত থেকে গাড়ি-গাড়ি চাল আমদানি হচ্ছে। তারপরও চালের দাম কমছে না কেন? প্রতিবছর এ সময় নতুন ধান উঠলে বাজারে চালের দাম অনেক কমে যায়। কিন্তু এবার বাজারের চিত্র উল্টো।

    আরেক চাল ক্রেতা আশানুর রহমান বলেন, দেশে পর্যাপ্ত ধানের আবাদ হয়েছে। তারপরও দাম কমছে না কেন? আমরা গরিব মানুষ, দাম না কমলে কীভাবে চলব? হয়তো সিন্ডিকেটের কারণে দাম কমছে না। তাই আমি মনে করি, প্রশাসন বাজারে নজরদারি করলে দাম অনেকটা কমে যাবে।

    বেনাপোল কাস্টম হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার এইচ এম শরিফুল হাসান বলেন, শুল্কমুক্তভাবে বেনাপোল বন্দরে ৪১০ ডলারে চাল আমদানি হচ্ছে। ১৭ নভেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর এক মাসে ৪ হাজার ৫০০ টন চাল আমদানি হয়েছে এ বন্দর দিয়ে। যেহেতু চাল একটি নিত্যপণ্য এবং দেশের বাজারে চাহিদা রয়েছে, সেহেতু আমরা কাস্টমসের সব কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করছি। বর্তমানে চাল আমদানির সময়সীমা ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।

    এমআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…