মৌলভীবাজারে ২৮ বছর বয়সী যুবতী মাম্পী রাণী দে এর জরায়ু কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডা: ফারজানা হক পর্ণার বিরুদ্ধে। মাম্পী রাণী দে মৌলভীবাজার পৌর শহরের সৈয়ারপুর এলাকার ব্যবসায়ী অনিমেষ দে এর স্ত্রী।
মাম্পী রাণী দে ও তার স্বামী অনিমেষ দে বলেন, ৮ জানুয়ারী হেলথ এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডা: ফারজানা হক পর্ণা’কে দেখালে তিনি আল্ট্রাসনোগ্রামের রিপোর্ট দেখে বলেন, আপনাদের দেড় মাসের একটি বেবি নষ্ট হয়েছে। হাসপাতালে ডিএনসি করতে হবে। ডিএনসি করে আধাঘন্টা রেষ্ট নিয়ে বাসায় চলে যেতে পারবেন। এটা খুব কঠিন কিছু না।
ডাক্তারের কথা অনুযায়ী আমরা স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে পরের দিন (৯ জানুয়ারী) ভর্তি হলে দুপুর ২টায় এসে ফোনে কথা বলতে বলতে অপারেশন ত্রিয়েটারে ঢোকেন ডা: ফারজানা হক পর্ণা। দুই মিনিট পরেই বের হয়ে বলেন আপনার স্ত্রীর রক্ত লাগবে তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করুন। আমি বিভিন্ন জায়গায় রক্তের জন্য যোগাযোগ করতে থাকি।
রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের দুইজন স্টাফ রক্ত দেয়া শুরু করেন। আমার স্ত্রীর চিল্লাচিল্লি শুনে আমি ওটিতে ঢোকতে চাইলে আমাকে ঢোকতে দেয়া হয়নি। এক পর্যায়ে আমি জোর করে ওটিতে ঢোকে দেখি আমার স্ত্রীর রক্তে ফ্লোর বেসে যাচ্ছে। রক্ত ফোম দিয়ে বউলে তোলে বেচিনে পালানো হচ্ছে। এ অবস্থায় আমার স্ত্রীকে সিলেট নিয়ে যেতে চাইলে দেয়া হয়নি। কিভাবে রোগীকে বাঁচানো যায় জানতে চাইলে ডাক্তার বলেন, জরায়ু কেটে ফেলতে হবে। পরবর্তীতে হাসপাতাল থেকে একটি কাগজে আমার স্বাক্ষর নেয়া হয়। ১০ মিনিট পর আরও একটি কাগজে আমার স্বাক্ষর নেয়া হয়। পরবর্তীতে ২ঘন্টা ১৭ মিনিট পর ডাক্তার বের হয়ে বলেন, এখানে আশার আগে আপনারা অন্য কোথায়ও ড্রাই করছিলেন? আপনাদের ৪ মাসের একটি বেবি ছিল। এক পর্যায়ে আমার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে উনি চলে যান। ৩দিন আমরা হাসপাতাল ছিলাম। কিন্তু একবারও আমাদের এসে দেখেননি।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি চিকিৎসক ডা: ফারজানা হক পর্ণা বলেন, “আমি রিক্স নিয়ে রোগীকে বাঁচিয়েছি। সুস্থ্য হয়ে বাসায় গিয়ে কার পরামর্শে আমার নামে বদনাম করছেন আমি বুঝতে পারছি না। তিনি আরও বলেন, অপারেশন চলাকালিন সময়ে হঠাৎ রোগীর ব্লিডিং শুরু হলে রোগীকে বাঁচানোর জন্য হাসপাতালের স্টাফরা ব্লাড দেন। তখন ডাক্তার আবু বক্কর মোস্তফাও ছিলেন।
এক পর্যায়ে আমরা বুঝতে পারলাম জরায়ুতে সমস্যা থাকায় ব্লিডিং হচ্ছে। ব্লিডিং বন্ধ করতে এবং রোগীকে বাঁচাতে হলে জরায়ু কাটতে হবে। তখন রোগীর স্বামীর অনুমতি ও হাসপাতালের সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে জরায়ু কাটি। রোগীর স্বামী তাকে সিলেট নিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন। এই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রোগীকে আমি সিলেট যেতে দেইনি। আমি রোগীকে সেইফ করার জন্য আন্তরিকতার সহিত অপারেশন করিছি। আমার কাজে কোনো দুর্বলতা ছিল না।
এমআর