চাঁপাইনবাবগঞ্জের চৌকা সীমান্তে বিজিবি সদস্য ও বাংলাদেশি নাগরিকদের কলা ও পানি খাইয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছেন মো. এনামুল হক নামে এক কৃষক।
এনামুলের বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর মোকারিমটোলা গ্রামে। সে মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে। স্ত্রী, দুই ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে তার সংসার।
জানা গেছে, গত শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের কিরণগঞ্জ ও চৌকা সীমান্তে যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল, সেখানেই বিজিবি সদস্য ও দেশের নাগরিকদের কলা ও পানি খাওয়াতে দেখা গেছে কৃষক এনামুল হককে। সেই দৃশ্য অনেকেই ক্যামেরাবন্দি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়লে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।
ফেসবুক টাইমলাইনে ২৪ সেকেন্ডের ভিডিওটি ছেড়ে কে এম নাজমুল হক নামের একজন লিখেন, আমার পাজর দিয়ে দূর্গ ঘাঁটি গড়তে জানি (চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত)। এরপরই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।
ভাইরাল হওয়ার বিষয়ে জানেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষক মো. এনামুল হক বলেন, বিজিবিকে পানি আর কলা-টোলাগুলো দিতে গেছিনু। সুখিয়া টুখিয়া গেছে তার কারণে। দু'ছড়ি কলা আর তিন জারকিন (বোতল? পানি লিয়া গেছিনু। ওখানে গিয়া শেষ কোরা ফের আবার পানি আনতে গেছিনু। চিল্লা চেচিয়া করিয়া তৃষ্ণা লাগতে পারে ওজন্য আমি লিয়া গেছিলাম। যাওয়া মাত্র বললো পানি খাবো,তখন বলনু পানি নিয়া আননু খান।
সীমান্তে এত উত্তেজনা, বিএসএফের গুলির সামনে যেতে ভয় লাগেনি, এমন প্রশ্নে এই কৃষক আরও বলেন, হেই কিসের গুলি। বাংলাদেশের জন্য জীবন দিয়া দিবো দরকার হলে। ভয় করলে ওগুলোতে যাতাম না।
ভাইরাল হওয়ার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ভাইরাল হওয়ার কোন কিছু আসেনা আমার সাথে। মানুষকে খাইতে দিয়েছি এটাই আমার কাছে অনেক ভালো। আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ। এটাই আমার কাছে মেলাকিছু। আর কে-কি করছে আমার দেখার নাই।
স্থানীয় বাসিন্দা মোরসালিন বলেন, সে আমার পাশে থেকেই এমন কাজ করেছে। তার এমন কাজে আমরা এলাকাবাসী খুব গর্বিত। এ ধরণের কাজ করছে দেশপ্রেমের টান ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষার ক্ষেত্রে। ইতিপূর্বেও বাবুল চাচা কাস্তে হাতে ভাইরাল হয়েছিল।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আব্দুর রোফ বলেন, এনামুল হকের কলা ও পানি খাওয়ার কাজটি অনেক ভালো একটি কাজ। চৌকা সীমান্তে দেশপ্রেম ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাই যার যার মতো করে এগিয়ে এসেছিল। আমিও সেখান ছিলাম, কিন্তু অন্যদিকে থাকায় তাকে দেখিনি।