প্রায় ৭৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও ৩০১ কোটি টাকার অস্বাভাবিক ব্যাংকিং লেনদেনের অভিযোগের কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, তার স্ত্রী এবং তার ছেলে ও সাবেক মেয়র তাহসীন বাহারের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে বলে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন নিশ্চিত করছেন।
দুদকের অনুসন্ধানে বাহাউদ্দিনের পুরো পরিবারের মোট ৭৪ কোটি ৯৮ লাখ ৫৩ হাজার ৮৭৫ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ৩০১ কোটি ২৭ লাখ ৩৭ হাজার ৯৮ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অবৈধ সম্পদের মধ্যে দুই মেয়ে আয়মান বাহারের নামে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও আজিজা বাহারের নামের ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার ২২২ টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় তাদের নামে সম্পদের হিসাব চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দুদকের দায়ের করা প্রথম মামলায় বলা হয়েছে, কুমিল্লার সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার পূর্বক ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৬৭ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৬ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন এবং তার ২৯টি ব্যাংক হিসাবে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৫৮ কোটি ৬৮ লাখ ৬৩ হাজার ৯০৫ টাকা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
ওই অর্থ জ্ঞাতসারে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলায় সাবেক মেয়র তাহসীন বাহারকে আসামি করা হয়েছে। তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের অসঙ্গতিপূর্ণ ৩ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৭০ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। আর তার ১৬টি ব্যাংক হিসাবে ৪২ কোটি ৫৮ লাখ ৭৩ হাজার ১৯৩ টাকা লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
তৃতীয় মামলায় আসামি হয়েছেন সাবেক এমপি বাহাউদ্দীন বাহার ও তার স্ত্রী মেহেরুন্নেসা। একজন গৃহিণী হয়ে তার স্বামীর অবৈধ স¤পদ বৈধ করার চেষ্টার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। তার বিরুদ্ধে ২ কোটি ৩৭ লাখ ৪৯ হাজার ৪৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ক্ষমতা পট পরিবর্তনের পর আত্মগোপনে আছে বাহার পরিবার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন গুলি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একাধিক মামলা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
পিএম