রাজশাহীর পবা উপজেলার গোয়ালদহ গ্রামের ৪ বছর বয়সী এক শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বৃদ্ধের বিরুদ্ধে মামলার অগ্রগতি নেই। অভিযুক্ত ব্যক্তি ইব্রাহিম হোসেন (৬৫) যিনি এলাকায় ‘সাদা বাবা’ নামে পরিচিত। গত ২৪ আগস্ট, ২০২৩ সালে এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটে। এরপর থেকে অভিযুক্ত পলাতক, আর ভুক্তভোগী পরিবার বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
ঘটনার সূত্রপাত সেদিন সকালে। শিশুটির মা তাকে বাড়ির বাইরে খেলতে পাঠান। অভিযুক্ত ইব্রাহিমের নাতির সাথে খেলতে খেলতে মধু দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর, নিজের নাতিদের বাইরে পাঠিয়ে দেয়। শিশুটির কান্না শুনে যখন নাতিরা ছুটে আসে। বাড়ি ফিরে শিশুটি তার মাকে সব জানায়। স্থানীয় মহিলারা শিশুটির শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে দ্রুত তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত ইব্রাহিম পলাতক। পরিবার পবা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। কিন্তু ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
স্থানীয়রা জানান, ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে আগেও চুরি ও প্রতারণার অভিযোগ ছিল। শিশুটির দাদা বলেন, "ইব্রাহিম অভ্যাসগত অপরাধী। সে প্রায়ই মহিলাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করত।"
গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি আব্দুস সালাম জানান, প্রথমে সামাজিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু পরিবার আইনি পদক্ষেপে অটল ছিল।
অভিযুক্তের স্ত্রী তার স্বামীর নির্দোষ দাবি করে বলেন, ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। অন্যদিকে, ইব্রাহিমের মেয়ে অভিযোগ করেন, ভুক্তভোগী পরিবার ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিল, যা দিতে না পারায় মামলা করা হয়েছে।
পবা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনিরুল ইসলাম দাবি করেন, তারা অভিযুক্তকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তবে, মেডিকেল রিপোর্ট পেতে দেরি হওয়ায় মামলার অগ্রগতিতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলে জানান তিনি। যদিও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, নভেম্বরেই রিপোর্ট পাওয়া গেছে।
এই ঘটনায় গোয়ালদহ গ্রামের মানুষ স্তম্ভিত। তারা চায়, দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে আর কোনও শিশু এমন নৃশংসতার শিকার না হয়। আর ভুক্তভোগী পরিবার চায়, তাদের ছোট্ট শিশুর জন্য ন্যায়বিচার। তারা পুলিশের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন, যাতে দ্রুত অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনা যায়।
এইচএ