সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছিলেন ঢাকাই চিত্রনায়িকা আফিয়া নুসরাত বর্ষা। যেখানে তিনি জানিয়েছেন, এই নায়িকাজীবন থেকে সরে যাবেন এবং পরিবারকে সময় দেবেন। কারণ হিসেবে বলেন, সন্তানেরা বড় হলে তার মা নায়িকা, এটাতে তারা কী ভাববে! এরপরই তাঁকে ঘিরে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। শোবিজের অনেকেই তাঁর কথার জবাব দিয়েছেন। এবার বর্ষার কথার ব্যাখ্যা নিয়ে ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন পরীমণি! যদিও তিনি তাঁর পোস্টে সরাসরি বর্ষার নাম উল্লেখ করেননি।
ফেসবুক পোস্টে বর্ষার মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন পরীমণি। বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে অনন্ত জলিলের স্ত্রীকে একহাত নিলেন তিনি।
শুরুতেই পরীমণি লিখেছেন, 'জ্বি ছোট্ট আপা, একদম ঠিক! সঠিক বলেছেন আপনি। কিন্তু আপা, আপনার বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে পর্দাতে হিরোইন লাগার কোনো ব্যাপারই নেই। কারণ আপনি এটা করার অপচেষ্টা যে করে গেছেন সেটা আজীবনই রয়ে যাবে।'
বর্ষা জানিয়েছেন, তাঁর হাতে থাকা তিনটি সিনেমার কাজ শেষে করেই অভিনয়কে বিদায় জানাবেন তিনি। সেই প্রসঙ্গ টেনে পরী লেখেন, 'আপনি এতই বাস্তববাদী যে আপনার হাতে আটকানো সিনেমাগুলো শেষ হলেই ইন্ডাস্ট্রি ছাড়তে চাইছেন! যদি সত্যিই এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তাহলে এখনই ছেড়ে দিন, নয়তো আজীবন বহন করুন।'
পরী আরও লেখেন, 'এই যে আপনি এত যুগ পরে এসে আপনার বাচ্চার দোহাই দিচ্ছেন এটা খুবই খামখেয়ালিপনা। এই যে আপনি বলছেন, আপনার বাচ্চাদের কারও দশ বছর হয়ে যাবে কারও সাত বছর হয়ে যাবে। কিন্তু আপা আপনি কি একবারও ভেবেছেন আপনার বয়সে, আপনার ক্যারিয়ারে আপনি কাকে কত বছর ধরে জিম্মি করে রেখেছেন? সেটা একবার ভাবেন তো আপা! কত বছর ধরে এই ইন্ডাস্ট্রি ডুবাচ্ছেন সেটা একবার ভাবেন।'
একের পর এক প্রশ্ন ছুঁড়ে তিনি লেখেন, 'আপনার বাচ্চাদের যদি আপনাকে দেখতে নাই ভালো লাগে, যে মা নায়িকা হলে তারা তার মাকে গ্রহণ করতে পারবে না লজ্জায়! তাহলে অন্তত এইটুকু গ্যারান্টি দেন যে তারা ভুলতে পারবে, কোনোদিন আপনি একজন নায়িকা ছিলেন? কোনো একদিন নাচাগানা করেছেন? কোনো একদিন নাভি দেখেছিলেন পর্দায়? কোনো একদিন আপনার হাটুর কাপড় উড়ে গিয়েছিল কোনো এক ফ্রেমে? কোনো একদিন ঠোঁটের কোণে কামড় দিয়েছিলেন ক্যামেরার অ্যাকশনে? যা দেখে শিস বাজিয়েছিল সিনেমা হলের রিক্সাচালক দর্শক? সেগুলো অন্তত ভুলিয়ে দেন আমাদেরকে। তারপর আপনার বাচ্চাদের নিয়ে চিন্তা করেন।'
বর্ষা সেই সংবাদ সম্মেলনে নিজের স্বামী অনন্ত জলিলের প্রশংসা করেছিলেন। যেখানে স্বামীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছিলেন, 'অনন্তকে যদি কোনো মেয়েদের বাজারেও ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে সেখানে ঘুরে কারও দিকে নজর না দিয়ে স্ত্রীর কাছেই ফিরে আসবেন।'
অনন্তের স্ত্রীর সেই মন্তব্যেও আপত্তি জানিয়েছেন পরী। চাঁচাছোলা ভাষায় তিনি বললেন, 'আপনি যে বলেছেন মেয়েদের বাজার! এএএএইইই...মেয়েদের বাজার কী? কী বোঝাতে চাইলেন কচি আপা? এটা আম, মুলা, আলু, কচু? তাহলে আপনি কী? আর বাজার হলে কী সমস্যা? যদি সেই বাজারের খরিদ্দার নাই-বা ছিল কোনোদিন? তারা ছিল বলেই বাজার হয়েছে। মেয়েদেরকে বাজাইরা কে বা কারা বানিয়েছে আপনার জানতে মন চায় নাই কখনো, কোনোদিন?'
সবশেষে এই নায়িকা লিখেছেন, 'শোনেন, এ রকম একটা বয়সের পরে আমি কেন, আমরা কেন, পৃথিবীর সমস্ত মেয়েরাই (প্রিন্সেস ডায়না হলেও) তার পার্টনারকে এ রকম বাজারে ছেড়ে দিতে পারে। কারণ ওই মহিলা জানেন, জীবনের কোন বয়সে তার জামাইকে যেকোনো জায়গায় ছেড়ে দেওয়া যায়।'