গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক টেন্ডারকৃত রাস্তার কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে টঙ্গীর স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত নেতা হচ্ছেন গাজীপুর মহানগর আওতাধীন টঙ্গী পশ্চিম থানা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব সেলিম কাজল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫২ নং ওয়ার্ড মুদাফা মাদ্রাসা মার্কেট এলাকার একটি শাখা রাস্তা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিলো। সম্প্রীতি রাস্তাটির কাজ পুনরায় সচল করার চেষ্টা করা হলে টঙ্গী পশ্চিম থানা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব সেলিম কাজল বিভিন্নভাবে বাধা প্রয়োগ করে। এইজন্য পূনরায় রাস্তাটির কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এ নিয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এবিষয়ে মুদাফা এলাকার বাসিন্দা ও টঙ্গী পশ্চিম থানা যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক আলমগীর হোসেন ভাসানী বলেন, এলাকার বাসিন্দা হিসেবে সেলিমের এমন কর্মকান্ড মোটেও উচিৎ নয়। দলীয় পদ থাকায় সে সরকারি কাজে বাধা প্রয়োগের কোনো ক্ষমতা রাখে না। তার উচিৎ রাস্তার কাজে আরোও সহযোগীতা করা। সেলিমের এমন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।
রাস্তার কাজের সহকারী কন্ট্রাকটার সেলিম জানান, আজকে প্রায় ৭ দিন যাবৎ রাস্তার কাজ পূণরায় প্রায় বন্ধ। কিছু স্থানীয় লোকদের কারণে কাজ করাটা দুষ্কর। আজ সন্ধ্যায় আমাকে সেলিম ফোন দিয়ে বলেছে আগামীকাল ঝামেলা সমাধান করে দিবে।
এছাড়াও জানা যায়, সেলিম কাজলের এমন কার্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় স্থানীয় এক যুবক কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ নানাভাবে হমকি প্রদান করেছেন সেলিম কাজলের শ্যালক শাকিল মাহমুদ সোহাগ। এমনকি নানা মানহানিকর মন্তব্যও করেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী যুবক মাসুম।
ভুক্তভোগী যুবক টঙ্গী পশ্চিম থানা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক মশিউর রহমান মাসুম। সে জানায়, আমাদের মহল্লার রাস্তার কাজটি দীর্ঘ দেড় বছর যাবৎ নানা সমস্যার কারণে বন্ধ ছিলো। সম্প্রতি কাজটি শুরু হবার পরে সেলিম কাজলের লোক দিয়ে রাস্তার কাজটি বন্ধ করে দেয় কারণ রাস্তার কাজের মাটি ও বালু সে দিতে চায় যদিও সে এইধরণের কোনো ব্যবসার সাথে জড়িত না। কিন্তু পরবর্তীতে জামায়াতের মোশাররফ হোসেনের মাধ্যমে আমাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে এমনকি আরোও জানায় যে, মাটি আর বালুর কাজ না পেলে কিছু খরচের টাকা অর্থাৎ চাঁদা দেয়ার জন্য।
আমি এবিষয়ে নানাভাবে তাদের বুঝানোর চেষ্টা করি কিন্তু সেলিম কাজল দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে চাঁদা দাবি করে। পরবর্তীতে মনের আক্ষেপ থেকে কারো নাম উল্লেখ না করেই আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এ আমার ব্যক্তিগত আইডি থেকে একটা ষ্ট্যাটাস দেই। এরপর থেকেই সেলিমের শ্যালক শাকিল মাহমুদ সোহাগ সেলিমের নাম উল্লেখ করে নানাভাবে আমাকে হুমকি প্রদান করে। এবিষয়ে আমি টঙ্গী পশ্চিম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি।
গাসিক ৫২ নং ওয়ার্ডের জামায়াতের কর্মী মোশারফ হোসেন বলেন, আমি নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য কথা বলেছি। আমি চেয়েছিলাম সকলে সম্মিলিতভাবে যেন কাজটা করতে পারে সেজন্য মাসুমের সাথে কথা বলেছি।
গাজীপুর মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক সাজেদুল ইসলাম জানান, উপযুক্ত প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে অভিযুক্ত সেলিম কাজলের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়ে ও খুদেবার্তা পাঠিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ ইসকান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, হুমকির বিষয়ে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত চলমান। উপযুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এনআই