সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মির্জা ওয়াহিদ সাদেক আমরুলের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, যোগদানের ২ মাসের মাথায় টাকা ছাড়া ভূমি সংক্রান্ত কোন কাজ করেন না তিনি। আর এসব লেনদেন করেন দালাল চক্রের মাধ্যমে। টাকা না দিলে সময়ক্ষেপণ করে নামজারির আবেদন বাতিল করে গ্রাহক হয়রানি করে বলে অভিযোগে করেছেন ভুক্তভোগীরা।
উল্লাপাড়ার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের বুলবুল হোসেন, তিনি এই ভূমি অফিসের একজন চিহ্নিত দালাল। ভূমি গ্রাহকদের কাছে টাকা নিয়ে নামজারির কাজ করে থাকেন তিনি। প্রতিটি নামজারির আবেদনে উপজেলার ভূমি অফিস পর্যন্ত গ্রাহকদের দিতে হয় ৫ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা।
উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামের বাসিন্দা শামাউন নবী গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করেছেন, তিনি .০০৯১ একর জমির নামজারীর আবেদনের হার্ডকপি জমা দিয়েছিলেন উক্ত ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তার কাছে। কিন্তু তিনি অজ্ঞাত কারনে কাজ বিলম্বিত করছিলেন। পরে তার সঙ্গে দেখা করলে তিনি জানান, কাগজে ঝামেলা আছে। আপনার কাজটি করতে হলে ২০ হাজার টাকা লাগবে। এতো মোটা অংকের টাকা দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব না হওয়ায় তার নামজারীর কাজটি বন্ধ হয়ে আছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন জানাবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী কয়েক ব্যক্তি জানান, তারা তাদের জমির নামজারী আবেদন অনলাইনে উক্ত ভুমি অফিসে জমা দিলেও হার্ডকপি গ্রহণের সময় কথিত ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আমরুল কারোর নিকট ৫ হাজার ১০ হাজার, কারোর নিকট ১৫ হাজার, ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। এই টাকা দিতে না পারায় তাদের কাজ হচ্ছে না। দিনের পর দিন ঘুরছেন তারা ওই অফিসে।
ভুক্তভোগীরা আরও অভিযোগ করেন, যেসব নামজারী আবেদনকারীদের সঙ্গে ঘুষের চুক্তি হয়, তাদের আবেদনের উপরে পেন্সিল দিয়ে ছোট করে লেখা হয় অফিস। আর যারা টাকা দিতে নারাজ তাদের আবেদনের উপরে পেন্সিল দিয়ে লেখা হয় পাবলিক। অবিলম্বে তদন্তের প্রেক্ষিতে উক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মির্জা মো. ওয়াহিদ সাদেক আমরুল জানান, ভূমি অফিসে দালাল আমি কিভাবে বন্ধ করব? সে তো এই দেশের নাগরিক। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। তিনি কোন দুর্ণীতি করেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মাদ হাসনাত (সহকারী কমিশনার ভূমির দায়িত্বপ্রাপ্ত) জানান, ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ করলে তিনি দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন।
এমআর