বাংলাদেশের ব্যবসার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে চীনা বিনিয়োগকারীদের প্রতি বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি চীনা বিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘আপনারা (চীনা বিনিয়োগকারীরা) বাংলাদেশের ব্যবসার সম্ভাবনার সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন’।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) চীনের ১০০টিরও বেশি শীর্ষ উদ্যোক্তা ও সিইওদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বাংলাদেশকে উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ তুলে ধরেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে কারখানা স্থানান্তর করা হলে চীনা বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের সুবিধা পাবেন। কারণ বাংলাদেশে কোনো বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা নেই এবং এটি বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা প্রদান করছে। এটাই বাংলাদেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়।
সরকার প্রধান উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশ চীনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী দেশ। এছাড়া বাংলাদেশ এমন একটি চমৎকার ভৌগোলিক অবস্থানে রয়েছে যেখানে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রসহ বড় বড় নদীগুলো প্রবাহিত হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরের কথা উল্লেখ করে তিনি বাণিজ্য ও ব্যবসা সম্প্রসারণে সমুদ্রের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, নেপাল ও ভুটান স্থলবেষ্টিত দেশ, যাদের কোনো সমুদ্র নেই। ভারতের সাতটি উত্তর-পূর্ব রাজ্যও স্থলবেষ্টিত। তিনি এসব দেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের ওপর জোর দেন, যা বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস অধিবেশনগুলোতে নতুন বাংলাদেশ সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি, বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ এবং বাংলাদেশি তরুণদের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকের আগে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিআইডিএ) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বিইজেডএ) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ‘বাংলাদেশ ২.০ : গেটওয়ে টু গ্রোথ’ শিরোনামে একটি উপস্থাপনা দেন। তিনি বাংলাদেশের বিনিয়োগ খাতের বর্তমান অবস্থা, চাহিদার পরিপ্রেক্ষিত এবং প্রতিযোগিতামূলক সুবিধাগুলো তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস সামাজিক ব্যবসা ও তিন শূন্যের (থ্রি জিরো) বিশ্ব নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের রাউন্ড টেবিলে বক্তব্য দেন। তিনি ‘এক নতুন সভ্যতা গড়ার’ আহ্বান জানান, যেখানে থাকবে শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ, শূন্য কার্বন নিঃসরণ, শূন্য দারিদ্র্য ও শূন্য বেকারত্ব, শিক্ষা ও নীতিনির্ধারণে সহযোগিতা
চীনের শীর্ষস্থানীয় তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পেকিং বিশ্ববিদ্যালয়, রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয় ও চিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ অধ্যাপক, ডিন ও চীনের শীর্ষস্থানীয় যুব নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।
চিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন লি দাওকুই অধ্যাপক ইউনূসের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ তার নেতৃত্বে দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। তিনি বাংলাদেশি আমলাদের জন্য চীনের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে ‘ডে-লং ডিপ ডাইভ’ আয়োজনের প্রস্তাব দেন।
পিএম