ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে। সকাল ৯টায় প্রায় লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে সেখানে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
ঐতিহাসিক এ ঈদের জামাতে অংশ নিতে দিনাজপুর সদর উপজেলা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের কয়েকটি জেলার মুসল্লিরা আসেন। জামাতে ইমামতি করেন মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান।
বৃহৎ এ জামাতকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিল কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। সিসিটিভি ক্যামেরার পাশাপাশি ছিল কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি। মাঠের আশপাশে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরাও তৎপর ছিলেন।
নামাজে অংশ নেন জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম, দিনাজপুর পৌর প্রশাসক বিয়াজুল ইসলাম,দিনাজপুর পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন মারুফ,জেলা বিএনপির সভাপতি সাধারন সম্পাদক, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও কর্মীরা।
জেলার নীলফামারী থেকে ঈদ জামায়াতে আসা মুসল্লী তামিরুল হক বলেন, একসাথে এত বেশি মুসল্লী একসাথে নামাজ আদায় করে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।
ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে ঈদ জামায়াতে আসা মুসল্লী ডা জাকির হোসেন বলেন,দীর্ঘ দিনের ইচ্ছে আজ আল্লাহর রহমতে পুরন হলো। একসাথে লাখ মুসল্লী ঈদের নামাজ আদায় করলাম। আল্লাহ আমাদের রোজ ও নামাজ গুলো কবুল করুন।
গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানের ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, আল্লাহ তালার রহমতে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠে মুসল্লীর সুন্দর ভাবে নামাজ আদয়া করতে পেরেছে। আমারা নামাজ শেষ মোনাজাতের মাধ্যমে দেশ ও জাতীর মঙ্গল কামনায় দোয়া করেছি।বিশেষ করে ফিলিস্তিনি মুসলিমদের জন্য দোয়া করেছি আল্লাহ তাদের হেফাজত করবেন।৭১ ও ২৪ সালের নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠ ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে লাখো মুসল্লীর উপস্থিতিতে সুন্দর ভাবে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠর নজরদারি ছিলো সবমিলিয়ে আলহামদুলিল্লাহ সুন্দর ভাবে নামাজ সম্পন্ন হয়েছে।
জানা যায়, বিভিন্ন স্থান থেকে বড় বড় ঈদগাহ মাঠের চিত্র নিয়ে এসে এ মাঠের নির্মাণ পরিকল্পনা করা হয়। সর্বপ্রথম মাঠের পশ্চিম প্রান্তে গত ২০১৫ সালে এ ঈদগাহ মাঠের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রায় দেড় বছর পর এটি নামাজের জন্য পুরো প্রস্তুত করা হয়। এ ঈদগাহে রয়েছে ৫২টি গম্বুজের দুই ধারে ৬০ ফুট করে দু’টি মিনার, এর মধ্যের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে এবং প্রধান মিনারের উচ্চতা ৫৫ ফুট। এসব মিনার আর গম্বুজের প্রস্থ হলো ৫১৬ ফুট। দেশের বড় ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দানের পশ্চিম দিকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এ ঈদগাহ মিনারটি। প্রত্যেকটি গম্বুজে দেওয়া হয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি সংযোগ। ৫২টি গম্বুজ ২০ ফুট উচ্চতায় স্থাপন করা হয়েছে। গেট দুটির উচ্চতা ৩০ ফুট নির্মাণে নান্দনিক স্থাপনা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
উল্লেখ্য, আগে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হতো কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায়। এখন দিনাজপুরের ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মাঠে সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।