চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানার মধ্যম হালিশহর এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন এক পোশাকশ্রমিক নারী। নিহতের নাম চাঁদনী খাতুন (২২)। এই হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার স্বামী মো. সবুজ খন্দকারকে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নগর পুলিশের বন্দর বিভাগের সহকারী কমিশনার মাহমুদুল হাসান সময়ের কণ্ঠস্বর-কে জানান, শনিবার (৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে বন্দর থানাধীন বাকের আলী টেকের মোড়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে চাঁদনীকে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর পরই তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাতেই নগরীর ধুমপাড়া এলাকা থেকে সবুজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
চাঁদনী খাতুন খুলনা জেলার দাকোপ থানার খাজুরিয়া গ্রামের চাঁনমিয়ার মেয়ে। জীবিকার প্রয়োজনে তিনি চট্টগ্রামে এসে কাজ করছিলেন সিইপিজেডের একটি পোশাক কারখানা—এভারটুবি বাংলাদেশ লিমিটেডে। একসময়ে ভালোবাসার টানে গড়া সংসারটিই তার জন্য হয়ে ওঠে মৃত্যুকূপ।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, চাঁদনীর স্বামী সবুজ খন্দকার একজন মাদকাসক্ত। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় চাঁদনীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন তিনি। এসব নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে কিছুদিন আগে চাঁদনী আশ্রয় নিয়েছিলেন তার মামার বাসায়।
শনিবার (৫এপ্রিল) পোশাক কারখানায় কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে ওঁৎ পেতে থাকা সবুজ তার পথ রোধ করে এবং কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছুরি হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে স্ত্রীর ওপর। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, একের পর এক ছুরিকাঘাতে মুহূর্তেই রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়েন চাঁদনী। পথচারীরা ছুটে এলে সবুজ পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান চাঁদনী।
সহকারী কমিশনার মাহমুদুল হাসান আরও বলেন, “ঘটনার পর আমরা দ্রুত অভিযান চালাই। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সবুজকে রাতেই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে। তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই মনোমালিন্য ছিল। সবুজ পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।”
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নিহতের পরিবার ও সহকর্মীরা। তারা দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
এনআই