নীলফামারী-১ (ডোমার-ডিমলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ডিমলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব উদ্দিন সরকারকে দুটি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে।
রবিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে নীলফামারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. দেলোয়ার হোসেন তার বিরুদ্ধে ডোমার ও ডিমলা উপজেলার দুটি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট মঞ্জুর করেন।
আফতাব উদ্দিন সরকারকে আদালত প্রাঙ্গণে আনার সময় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিবেশ। বিক্ষুব্ধ জনতা তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে, কেউ কেউ গাড়িতে ওঠানোর সময় তাকে মারধরও করার চেষ্টা করেন। ‘ভুয়া এমপি’, ‘ভোট চোর’, ‘ফাঁসি চাই’—এমন সব শ্লোগানে মুখর ছিল আদালত চত্বর।
২০১৮ সালে ২৩ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নীলফামারী-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বেগম খালেদা জিয়ার ভগ্নীপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের নির্বাচনী প্রচারণার গাড়িবহরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আফতাব উদ্দিন সরকারসহ আওয়ামী লীগের ৪৩ নেতাকর্মীর নামোল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আসামি করে আদালতে মামলা করেন জোড়াবাড়ী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রবিউল ইসলাম।
এছাড়া ২০১৫ সালের ১৪ মার্চ উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মাসুদ বিন আমিন সুমনকে ডোমার শহরের একটি চায়ের দোকান থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।
এরপর তাকে থানায় ব্যাপক নির্যাতনসহ সাবেক সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার ওসির মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আফতাব উদ্দিন সরকার ও ডোমার থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের নাম উল্লেখ করে এবং ৩০ থেকে ৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আদালতে মামলা করেন যুবদল নেতা সুমন।
সাবেক এই এমপির বিরুদ্ধে নীলফামারীতে আরও তিনটি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে জমি দখল, অগ্নিসংযোগ ও স্থানীয়দের নির্যাতনের অভিযোগ উল্লেখযোগ্য।
এলাকাবাসীর দাবি, ‘আগুন খাওয়া বাহিনী’ গঠন করে সাধারণ মানুষের উপর চরম নিপীড়ন চালাতেন তিনি ও তার ঘনিষ্ঠরা।
জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আল মাসুদ চৌধুরী জানান, “তিনি আগে রংপুরের একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। আজ তাকে ডোমার ও ডিমলার দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এখনো রিমান্ড আবেদন করা হয়নি, পরে তা করা হবে।”
প্রসঙ্গত, গেল ৬ মার্চ রংপুর শহরের সেনপাড়া এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। তখন তাকে রংপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
এসআর