সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) আইন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম মুন্নার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাকে মিথ্যা অভিযোগ উল্লেখ করে তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
রবিবার (৬ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায় ৭৯ জন নাম উল্লেখিত এবং ১২৫ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয় যে, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের কর্মীরা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উস্কানিতে বর্তমান সরকারকে উৎখাত, জনসাধারণের শান্তি বিনষ্ট ও সরকারি সম্পদের ক্ষতি সাধনের লক্ষ্যে গত ১২ মার্চ বিক্ষোভ মিছিল করেছে এবং দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। এই মামলায় গত ৫ এপ্রিল নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মী সন্দেহে মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ প্রহরায় আদালতে প্রেরণ করা হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা মুন্নার গ্রেফতারকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং মামলা প্রত্যাহার করে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। বক্তারা জানিয়েছেন, মামলার এজাহারে উল্লেখিত ঘটনার দিন মুন্না বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বৃহত্তর খুলনা বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন, যা তার ফেসবুক একাউন্টে পোস্ট করা ছবি ও স্ট্যাটাস থেকেও প্রমাণিত হয়।
আইন বিভাগের প্রভাষক লিমন হোসেন বলেন, "এজাহারে উল্লেখিত ঘটনার দিন মুন্না ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিল এবং একটি ইফতার ও দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শতশত শিক্ষার্থী এবং আইন বিভাগের সকল শিক্ষকদের পক্ষ থেকে মুন্নার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ দেশের সকল মানুষ যেন ন্যায়বিচার পায় এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয় সেই দাবি জানাই। আইন উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে অনতিবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে মুন্না যেন দ্রুত শিক্ষা-কার্যক্রমে ফিরতে পারে সেই দাবি জানাচ্ছি।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মূখ্য সংগঠক ও গবি আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তাওহীদ আহমদ সালেহীন বলেন, "আন্দোলনের শুরু থেকেই মুন্না আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একাগ্রতার সাথে নিজের পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। মুন্নার বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত মব সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। আগামীতে কারো বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার পূর্বে যেন সঠিক সাক্ষ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করা হয় সেটা পুলিশকে নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় এর পরিমাণ ভয়াবহ হবে।
এ ব্যাপারে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হুমায়ুন কবীর মোল্লা বলেন, "অভিযুক্তের যদি কোন সাক্ষ্য প্রমাণ থাকে যে তিনি উক্ত ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নয় তাহলে সেই মর্মে আদালতে প্রমাণ পেশ করুক এবং আমাদের কাছেও কাগজপত্র দিলে আমরা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।"
এমআর