এইমাত্র
  • পরীমণিকে আমার মনে হয় ‘পাওয়ার হাউস অব ট্যালেন্ট’: পরমব্রত
  • জামিনে মুক্ত বিএনপি নেতা চাঁদ, বিকেলে স্ত্রীর জানাজা
  • তিন হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে নেশাজাতীয় দ্রব্য পাচারের অভিযোগ
  • ইতালির বিদায়ে তোপের মুখে দলটির কোচ স্পালেত্তি
  • বেরোবিতে লোক প্রশাসন বিভাগের প্রধান সাব্বীর আহমেদ চৌধুরী
  • রাজশাহীর সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফা মারা গেছেন
  • মাদারীপুর পৌরসভার বাজেট ঘোষণা
  • বর্ষায় কাপড় শুকানোর সহজ উপায়
  • টাঙ্গাইলে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, স্বামী গ্রেপ্তার
  • আবারও পেছালো সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন
  • আজ রবিবার, ১৬ আষাঢ়, ১৪৩১ | ৩০ জুন, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    প্রধান শিক্ষকের একরোখা সিদ্ধান্তে হুমকির মুখে পুকুর ও স্কুল ভবন

    নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ১০:৪৪ পিএম
    নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ১০:৪৪ পিএম

    প্রধান শিক্ষকের একরোখা সিদ্ধান্তে হুমকির মুখে পুকুর ও স্কুল ভবন

    নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ১০:৪৪ পিএম

    পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুকুরের পাড় কেটে মাটি সমান করার অভিযোগ উঠেছে। এতে ওই পুকুরের প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার মাছ বের হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরিসহ পুকুরটির স্থায়ী ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পুকুরটির মালিকপক্ষ। সংস্কারের নামে ঝুঁকিতে ফেলেছে স্কুল ভবনটিকেও।

    ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের বোছাপাড়া এলাকায়। ওই এলাকার কাশিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলামের দিকে অভিযোগের তীর।

    সরেজমিন ঘটনাস্থলে গেলে এক্সকাভেটর দিয়ে পুকুরের দক্ষিণ দিকের পাড় কাটতে দেখা যায়। বর্ষার শুরুতে প্যালাসাইডিং দেওয়ালের পরিবর্তে যেনতেন করে নিম্মামানের পিলার ও বাঁশের বেড়া দিয়ে বাঁধাই করে পুকুর পাড় কেটে স্কুলের জায়াগা সংস্কার করতে দেখা যায়। এতে একদিকে যেমন ব্যক্তিমালিকানাধীন পুকুরটি স্থায়ী ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তেমনি স্কুল ভবনের পেছনের দিকের ৫-৬ ফিট মাটি কাটায় সংস্কারের নামে উলটো ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টিতে মাটি ধুয়ে পুকুরে পড়লে মাছের উৎপাদন ব্যহতসহ মারা যেতে পারে মাছ।


    জানা গেছে, প্রায় ৩০ বিঘা জায়গা নিয়ে শুয়াই দীঘির অবস্থান। বর্তমানে পুকুরটি মির্জা ফেরদৌস ও তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানায় রয়েছে। ১৯৭৮ সালে নসির উদ্দিন ও আব্দুস সামাদ নামে দুই ব্যক্তির দান করা ৬৩ শতক জমিতে গড়ে উঠে কাশিমপুর প্রাথমিক বিদ্যলয়টি। যা ২০১৩ সালে সরকারিকরণ হয়।

    বিদ্যালয়টির শিক্ষকরা বলেন, কাগজে কলমে বিদ্যালয়ের ৬৩ শতক জমি থাকলেও দখলে ছিল মাত্র পৌনে ১২ শতক জমি। সম্প্রতি জমির দলিল সংগ্রহ ও জমি মাপযোখ করে স্কুল ভবনের পেছনের দিকে অর্থাৎ পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে স্কুলের বাকী জমিটুকু চিহ্নিত হয়। যদিও এর প্রেক্ষিতে স্কুলের দখলে ছিল পুকুর মালিকের জমি। স্কুলের দাবির প্রেক্ষিতে পুকুর মালিকরা স্কুলের প্রাপ্য জমিটুকু ছেড়ে দেন। তবে অনুরোধ জানান পাড় না কেটে যেন তাদের জমি বুঝিয়ে নেওয়া হয়।


    তবে প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম স্কুল ভবন কিংবা পুকুরের ক্ষতির বিষয়টির তোয়াক্কা না করে স্কুল ভবন থেকে প্রায় ৫-৬ ফিট মাটি কেটে সমান করে ফেলেন। বর্ষার শুরুতে প্রধান শিক্ষকের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীরা। পুরনো শক্ত মাটি কেটে নমনীয় করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানান পুকুর পাড়ের বাসিন্দারা।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যে ভাবে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি কেটেছেন তাতে বর্ষা মৌসুমে অতি বৃষ্টিতে মাটি ধুয়ে গিয়ে স্কুল ভবন যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আছে তেমনি পুকুরের পানি বেড়ে গিয়ে মাছ ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বর্ষার আগে প্যালাসাইডিং দেওয়াল নির্মাণ করে জায়গাটি সংস্কার করা উচিত ছিল।


    স্থানীয়রা আরো জানান, এখন সংস্কার করা জায়গাটি স্কুল ভবন থেকে আরো নিচু হয়েছে। বরং এখানে বাইরে থেকে মাটি এনে ভরাট করলে মূল ভবনের সাথে একই লেভেলে হতো জায়গাটি।

    মির্জা ফেরদৌস অভিযোগ করেন, পুকুর খনন করে পাড় বাঁধা হয়েছিল। জমি তারা বুঝিয়ে নিক কিন্তু পাড় কেটে আমার এত বড় সর্বনাশ কেন করলো। জমিটা এখন তাদের হলেও মাটিতো আমার। সংস্কারের জন্য তারা সরকারি বরাদ্দ পেলেও পাড়ের মাটি কেটেই সমান করেছে জমি।

    এইদিকে স্কুল রক্ষায় পুকুর পাড় দিয়ে প্যালাসাইডিং দেওয়াল নির্মাণের কথা থাকলেও বরাদ্দ সংকটের অযুহাতে নিম্মমানের পিলার আর বাঁশের বেড়া দিয়ে দায়সারা পাড় বাঁধা হয়েছে। এতে চলতি বর্ষায় অতি বৃষ্টিতে পাড় ভেঙ্গে গিয়ে পুকুরের পানি স্কুল ভবনের কাছাকাছি চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

    শুধু তাই নয় পুকুর থেকে ২০ মিটার দূরেই রয়েছে ক্যানাল। যা দিয়ে ওই এলাকার কয়েকশো একর জমির পানি নিষ্কাশন হয়। পুরনো মাটি খনন করে সংস্কার করায় ক্যানালে মাটি পড়ে সেটিও বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

    তবে এতকিছুর পরও নিজের অবস্থানে অনড় প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা জমি পাবো সেটা বুঝে নিয়ে সংস্কার করছি। এতে শিক্ষার্থীরা খেলার মাঠ পাবে। যা করছি তার সবকিছু সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা রাসেদুজ্জামান স্যার জানেন। অতি বৃষ্টিতে পুকুরের পানি উপচে পড়লে তা বন্ধ করতে খোয়া-বালু এনে রাখা হয়েছে। যখনই প্রয়োজন পড়বে আমার লোকজন তা মেরামত করে দিবে। বৃষ্টিতে পুকুর পাড় পাহাড়া দিবে কে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

    এই বিষয়ে সহকারী প্রাথমিক কর্মকর্তা রাসেদুজ্জামান বলেন, আমার অধীনে ৫০টি বিদ্যালয়। মাসে একবার করেও সব স্কুলে যাওয়া সম্ভব হয়না। ওনাকে আমি ২-৩ ফিট মাটি কেটে সংস্কার করতে বলেছি। উনি যে এভাবে সংস্কার করবেন ভাবিনি। আমি সামনে সপ্তাহে পরিদর্শনে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

    প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজমল হোসেন বলেন, সংস্কারের নামে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হোক এটা আমরা কখনই সমর্থন করি না। আমি ভালভাবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনে মাটি ভরাটের নির্দেশ দিব।

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফুল আলম বলেন, আমি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানাবো।

    এমআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…