নওগাঁর রানীনগরে সাবেক স্ত্রীর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছাড়েন হেলাল উদ্দিন সরদার (২৭)। অভিমানে গৃহবধূর আত্মহত্যা করেছেন।
সোমবার (০৪ নভেম্বর) রাতে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় অভিমান করে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে মিম আক্তার (১৭)। পরে তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে মারা যায় মিম।
মীম আক্তার নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মালশন গ্রামের আসাদুল প্রামানিক এর মেয়ে। আর অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিন সরদার একই এলাকার আঁকনা গ্রামের মকলেছুর রহমান সরদারের ছেলে। তিনি মালয়েশিয়া প্রবাসী।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মালয়েশিয়া প্রবাসী হেলাল উদ্দিন সরদার এর সাথে পারিবারিকভাবে মিম আক্তারের বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের জেরে বিয়ের ৭ মাসের মাথায় গত ৭ জুলাই বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরবর্তীতে হেলাল ফেসবুকে ‘মিম আক্তার’নামে একটি আইডি খুলেন। এরপর ওই আইডিতে সাবেক সাবেক স্ত্রী মিমের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করতেন।
এছাড়া হোয়াইটস অ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে মিমের অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে। এমনকি গৃহবধু মিমের হোয়াইস আ্যপে এসব ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে উত্যক্ত করতেন হেলাল। এসব কারণে মিম তার ব্যবহৃত মোবাইলটি ভেঙ্গে ফেলেন। ঘটনাটি পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানি হলে অভিমান করে সোমবার রাত ৮টার দিকে কীটনাশক পান করে (পোকামাকড় নিধনের বিষ) আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষয়টি জানার পর পরিবারের লোকজনসহ তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে মারা যায়।
মিমের বাবা আসাদুল প্রামানিক বলেন, বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক কলহ হতো। পরে মেয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তারপর থেকেই হেলাল নানাভাবে বিরক্ত ও উত্যক্ত করে আসছিল। এমনকি ফেসবুকে মেয়ের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছাড়তো। এসব কারনে মেয়ে অভিমান করে ক্ষোভে সবার অজান্তে বিষ পান করে আত্মহত্যা করে। হেলালসহ যারাই জড়িত থাক,তাদের সবার কঠিন শাস্তি দাবী করছি।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিন সরদারের পরিবারের লোকজন। গ্রামের বাড়ি আঁকনাতে গিয়েও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কীটনাশক পানের পর নওগাঁ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবস্থান মারা গেছে। নওগাঁয় মারা যাওয়ার কারণে সদর থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করছেন। পরবর্তী আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এআই