পঞ্চগড়ে একটি দোকান থেকে এক বস্তা চাল চুরির অভিযোগে আটক করা যুবক রাজু আহম্মেদকে (১৯) পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ মোটরসাইকেল চুরির মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজুর পরিবার।
রাজু আহম্মেদ পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের মাহানপাড়া এলাকার আইবুল হকের ছেলে। গত শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাতে স্থানীয়রা হাড়িভাসা বাজারের একটি মুদি দোকান থেকে চাল চুরির অভিযোগে তাকে আটক করে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। পরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বিষয়টি থানায় জানান।
ইউপি চেয়ারম্যান জানান, স্থানীয় দোকানদারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এসে রাজুকে আটক করে নিয়ে যায়। দোকানদার মামলা করতে চাইলেও পুলিশ প্রয়োজন নেই বলে জানায়। তবে পরে রাজুকে মোটরসাইকেল চুরির একটি মামলায় জড়ানোর বিষয়টি জানতে পেরে তিনি হতবাক হন।
পুলিশের নথি অনুযায়ী, গত ৪ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৩টার দিকে রাজু আহম্মেদ অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের সঙ্গে একটি মোটরসাইকেল চুরি করেছে। ওই ঘটনায় নাজমুল হুদা (৪৬) নামের এক ব্যক্তি ৬ জানুয়ারি সদর থানায় একটি মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবিদ হাসান বাদল এ মামলায় রাজুকে আসামী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন।
তবে পরিবারের দাবি, রাজু এক বস্তা চাল চুরি করতে পারে, কিন্তু তাকে মোটরসাইকেল চুরির মিথ্যা মামলায় জড়ানো অযৌক্তিক। তার বাবা বলেন, “আমার ছেলে অপরাধ করলে তার জন্য শাস্তি হোক। কিন্তু তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো কেন?”
ইউপি চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন, “রাজুকে চাল চুরির অভিযোগে পুলিশে সোপর্দ করি। কিন্তু পরে শুনি তাকে মোটরসাইকেল চুরির মামলায় জড়ানো হয়েছে। এ ঘটনায় আমি খুব বিব্রত।”
অভিযুক্ত এসআই হাফিজুল ইসলাম এবং এসআই আবিদ হাসান বাদলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস. এম. মাসুদ পারভেজ বলেন, “চাল চুরির বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ না থাকলে মামলা নেওয়া সম্ভব নয়। আর অন্য মামলায় তথ্য থাকলে আটক করা যেতে পারে। চোর সাধারণত একাধিক চুরির সঙ্গে জড়িত থাকে।”
পুলিশের এমন ভূমিকা স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তারা সঠিক তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে।
এমআর