কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশু বৃদ্ধাসহ ২৫ জনের মতো আহতের খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকাল ৩টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তাদেরকে কামড় দেয়। আহতদের মধ্যে ১৬ জনের নাম হাসপাতালে এন্ট্রি থাকলেও ১৮ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য প. প. কর্মকর্তা ডাক্তার বুলবুল আহমেদ। এছাড়াও অন্যান্য আহতরা বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
আহতরা হলেন- পৌর শহরের চণ্ডিবের এলাকার ২ বছরের শিশু সন্তান রফিয়া, ৪ বছরের শিশু সাহাবী ও পপি বেগম (৩৮), স্বপন মিয়া (২৫), গাছতলা ঘাট এলাকার বৃদ্ধা রাফিয়া (৬০), ভৈরবপুর এলাকার খোকন মিয়া (৩৮), পঞ্চবটি এলাকার নাজিদ মিয়া (৪৩), মমতা বেগম (৫০), উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর এলাকার সেলিম মিয়া (২০), একই এলাকার নুপুর বেগম (১৪), জাহানারা বেগম (৭০) ও রাজ্জাক মিয়া (৬০) ও স্মৃতি বেগম (৩০), আগানগর এলাকা দীপ্তি আক্তার (১৩), সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রামের রইছ মিয়া (৬৫) সহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টাফের মা আক্তারবাণু (৫৮), হাসপাতাল চত্বরের মসজিদে নামাজ পড়তে আসা একজন মুসল্লী ও উপজেলা শিক্ষা প্রকৌশলী রেজাউল করিম (৩৩)সহ ২৫ জন নারী-পুরুষ ও শিশু রয়েছে।
স্থানীয়রা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৭ জানুয়ারি বিকাল ৩ টা থেকে উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী গ্রাম থেকে পাগলা কুকুরটি কামড়ানো শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর, শহরের স্টেডিয়াম পাড়া মেরাতলী এলাকায়, চণ্ডিবের এলাকায়, গাছতলাঘাট এলাকায়, ভৈরবপুর এলাকায় ও পঞ্চবটী এলাকায়, উপজেলা পরিষদের সামনে পথচারি, ও স্থানীয় বাসিন্দা শিশু, বৃদ্ধাসহ বেশ কয়েকজন নারী পুরুষকেম ধ্যরাত পর্যন্ত কামড় দিয়ে আহত করে।
প্রত্যক্ষদর্শী আজহার মিয়া বলেন, চণ্ডিবের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেইটে স্বপন মিয়া ও হাসপাতালের ভিতরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন স্টাফের মা ও হাসপাতাল চত্বরে মসজিদের নামাজ পড়তে আসা একজন মুসল্লিকে পাগলা কুকুরটি কামড় দেয়। আমি কোন রকম বেঁচে যায়।
আহত খোকন মিয়া বলেন, আমি স্টেডিয়াম পাড়া একটি চায়ের দোকানে বসে ছিলাম। হঠাৎ একটি পাগলা কুকুর আমি সহ বেশ কয়েকজনকে কামড় দেয়। পরে আমিসহ কয়েকজন দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়।
আক্তার বাণু বলেন, আমি হাসপাতালে কোয়াটারে আমার বাসার গেইটে দাড়িয়ে ছিলাম হঠাৎ একটি কুকুর এসে কামড় দেয়। আমি এখনো আতঙ্কে রয়েছি।
এ বিষয়ে আহত মমতা বেগম বলেন, আমি আমার নাতনীকে নিয়ে দোকানে গিয়েছিলাম বিস্কিট কিনতে। হঠাৎ একটি পাগলা কুকুর এসে কামড় দেয়। পরে আমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসি।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার, ডা. আব্দুল করিম বলেন, পাগলা কুকুরের কামড়ে গতকাল ১৭ জানুয়ারি থেকে আজ ১৮ জানুয়ারি মোট ১৮ জন চিকিৎসা নিয়েছে। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা ভেকসিন নিয়ে বাসায় চলে যায়। কুকুরটি শনাক্ত করতে পারলে বুঝা যাবে হাইড্রোফোবিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে কিনা। কুকুরটি যদি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয় দ্রুত ভেকসিন দিতে হবে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন বলেন, এ প্রতিনিধির মাধ্যমে জানতে পেরেছি। আমি বিষয়টি খোঁজ খবর নিচ্ছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি কুকুরটি পাগল হওয়ার কারণ নিশ্চিত করে তারপর কুকুরটি দ্রুত শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এআই