লালমনিরহাটে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই যত্রতত্র গেড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা। আর এই অধিকাংশ ইটভাটাই কৃষি জমি দখল করে গড়ে উঠছে। কৃষি জমির টপ সয়েল পুড়িয়ে বানানো হচ্ছে ইট। পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। অধিকাংশ ইটভাটায় নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। আর এতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে পরিবেশে। ভাটার আগ্রাসনে দিন দিন কমে যাচ্ছে ফসলি জমি। ফলে দিন দিন ফসল উৎপাদন কমছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ থাকলেও রহস্যজনক কারণে নিরব সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না ইটভাটার মালিকরা, কৃষিজমি নষ্ট করে জমির অংশ টপসওয়েল ইট ভাটায় চলে যাচ্ছে। ইটভাটায় কাঠ, বাশেঁর মুরা ব্যবহার করার কারণে বিলীন হয়ে যাচ্ছে নানা প্রজাতির বৃক্ষ। আর কৃষি জমি থেকে মাটি সংগ্রহ চলছে অবাধে। পরিবেশ হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে ইটভাটা মালিকরা। এবিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন একেবারেই নিবর ভূমিকা পালন করছে। কোন প্রকার প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় কোন প্রকার নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না মেনেই চলছে এসব ইটভাটা।
জানা গেছে, জেলায় প্রায় ৫৫টি ইটভাটা মধ্যে ৩২টি অবৈধ রয়েছে। এসব ইটভাটার অধিকাংশ ভাটাই অবৈধ। আর এসব ইটভাটার বেশির ভাগই স্থাপন করা হচ্ছে ফসলি জমি বা জনবসতি এলাকার পাশ ঘেঁষে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনে বলা আছে কৃষিজমিতে কোনো ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। শুধু তাই নয় ওই আইনের আরো বলা হয়েছে নির্ধারিত সীমারেখার (ফসলি জমি) এক কিলোমিটারের মধ্যেও কোনো ইটভাটা করা যাবে না। তাছাড়া বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ ভাটা মালিকরা লঙ্ঘন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান ইটভাটা মালিকরা জোরপূর্বক রাতের আধারে তাদের জমি থেকে মাটি কেটে নিয়েছেন। এতে করে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে।
জেলার আদিতমারী উপজেলার বাসিন্দা রাকিব হাসান বলেন, প্রসানের সাথে ম্যানেজ ছাড়া কখনই এভাবে অবৈধ ইটেরভাটা চালানো সম্ভব না। আমারা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি এসব অবৈধ ইটেরভাটা বন্ধ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভুমিকা রাখবে।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড.সাইফুল আরেফিন বলেন, ইটভাটার কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। আমরা লক্ষ করেছি, জেলায় প্রায় শতাধিকটি ইটভাটা রয়েছে। এসব ভাটা পরিবেশের পাশাপাশি কৃষি জমির ক্ষতি করছে। এ অবস্থায় জেলার অবৈধ ইটভাটা বন্ধের বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক রকিব হায়দার বলেন, ইটভাটা চালাতে কিছু বিধি নিষেধ মানতে হয় যারা এই বিধিনিষেধ মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এআই