চট্টগ্রাম নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শনিবার (১৫ মার্চ) রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি থেকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) একটি বিশেষ টিম তাকে আটক করে। ছোট সাজ্জাদের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ অন্তত ১০টিরও বেশি মামলা রয়েছে।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী, বায়েজিদ বোস্তামী, চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল ছোট সাজ্জাদ। দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে বেড়ালেও শেষ রক্ষা হয়নি। শনিবার রাতে রাজধানীর অভিজাত এলাকা বসুন্ধরা সিটি থেকে সিএমপির বিশেষ দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
সিএমপি পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, "সাজ্জাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও সে সবসময় আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে থেকেছে। তবে এবার গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয় এবং বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে ধরা সম্ভব হয়েছে। আমরা এখন তার অপরাধজগতের নেপথ্যে থাকা অন্যান্য সহযোগীদের খুঁজে বের করতে কাজ করছি।"
ছোট সাজ্জাদের গ্রেপ্তারের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও বার্তা দেন তার স্ত্রী। ভিডিওতে তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমার জামাই গতকাল রাতে অ্যারেস্ট হইছে। এটা নিয়ে হায়-উল্লাস করার কিছু নেই। মামলা যখন আছে অ্যারেস্ট তো হবেই। এগুলা নিয়ে এতো টেনশন করে, দুঃখ প্রকাশ করে, কান্নাকাটি করার কিছু নেই।
তিনি আরও বলেন, আপনারা যারা ভাবছেন আমার জামাই অ্যারেস্ট হইছে, আর কোনদিন বের হবে না—ওদের জন্য এক বালতি সমবেদনা। আমরা কারি-কারি, বান্ডিল-বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। আমার জামাই বীরের বেশে ফিরে আসবে। যারা এ ঘটনা ঘটায়ছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। মাথায় রেখো—এতোদিন আমরা পলাতক ছিলাম, এখন তোমরা পালানোর সময় এসেছে।
তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, সাজ্জাদের স্ত্রী কি আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন? তার বক্তব্য কি বিচার ব্যবস্থার প্রতি চ্যালেঞ্জ? নাকি এটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য নতুন হুমকি?
ছোট সাজ্জাদ একসময় কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিত। ধীরে ধীরে তার অপরাধী চরিত্র আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠে। স্থানীয়দের অভিযোগ, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ব্যবসা, মাদক নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিপক্ষ দমন করতে ভয়ংকর কৌশল অবলম্বন করত সে। তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সন্ত্রাসী বাহিনী নিরীহ মানুষের কাছে এক আতঙ্কের নাম ছিল।
আইনশৃঙ্খলা বিশ্লেষকদের মতে, চট্টগ্রামের অপরাধ জগতকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে শুধু বড় সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করাই যথেষ্ট নয়, বরং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
এসআর