বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামির সাজা বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রাখা হয়েছে। এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে বুয়েট সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৬ মার্চ) রায়ের পরপরই এক বিবৃতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ওই বিবৃতিতে আমরা আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায় পুনর্বহাল মাইকফলক উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, এই মামলাটি আমাদের সকলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি শুধু একটি বিচারিক রায় নয়, বরং ন্যায়বিচার, মানবিক মূল্যবোধ এবং ক্যাম্পাসকে সন্ত্রাসমুক্ত করার সংগ্রামের একটি মাইলফলক।
বিবৃতিতে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা, এই রায়ে সন্তুষ্ট এবং দাবি করে রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান। এতে আরও বলা হয়, ৫ আগষ্টের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমির পলায়ন আমাদের হতভম্ব করেছে। মুনতাসির আল জেমি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং আবরার ফাহাদ হত্যায় তাঁর ভূমিকার জন্য বিচারিক আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। ফাঁসির আসামিদের স্থান হওয়ার কথা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে আবৃত কনডেম সেলে। সেখান থেকে এত শীর্ষ সন্ত্রাসীর পলায়ন ন্যক্কারজনক এবং আমাদের জন্য লজ্জার। এই পলায়ন শহীদ আবরার ফাহাদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি।
বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, দ্রুত খুনি মুনতাসির আল জেমিসহ বাকি সকল পলাতক আসামিকে খুঁজে বের করে আটক করতে হবে। পাশাপাশি, জেমির পলায়নকার্যে সহযোগিতাকারী প্রত্যেক ব্যক্তিকে শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির নামে কোন ধরনের সহিংসতা, অনাচার বা অপকর্মের স্থান নেই বলে উল্লেখ করে বলেন, আমরা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মতো সংগঠনের বিরুদ্ধে যেমন কঠোর অবস্থান নিয়েছি, তেমনি কোনো ছাত্র সংগঠনই যেন ছাত্ররাজনীতির নামে ক্যাম্পাসে সহিংসতা বা অনিয়মের আশ্রয় না নেয়, সে বিষয়ে আমরা সজাগ থাকব।
এর আগে রোববার দুপুরে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামির সাজা বহাল এবং একই সঙ্গে পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রাখেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে পরদিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। মাত্র ৩৭ দিনে তদন্ত শেষ করে একই বছরের ১৩ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান।
এমআর-২