এইমাত্র
  • ভোলার তেঁতুলিয়া নদী থেকে ৫ জলদস্যু আটক
  • ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট
  • বাংলাদেশিদের মেডিকেল ভিসা দিচ্ছে না ভারত, সুযোগ নিচ্ছে চীন
  • শেরপুরে অনগ্রসর নৃ-গোষ্ঠীদের মাঝে বাছুর বিতরণ
  • জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের সহায়তা দেবে ইইউ
  • বাউফলে নির্মাণের একদিন পরেই সড়কে ধ্বস
  • অবশেষে কমলাপুর থেকে ট্রেন চলাচল শুরু
  • গাজায় হামলার প্রতিবাদে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
  • দেওয়ানগঞ্জে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত
  • নওগাঁ-বগুড়া-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা
  • আজ বুধবার, ৫ চৈত্র, ১৪৩১ | ১৯ মার্চ, ২০২৫
    ধর্ম ও জীবন

    ঐতিহাসিক বদর দিবস আজ

    সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্ক প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০২:২৩ পিএম
    সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্ক প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০২:২৩ পিএম

    ঐতিহাসিক বদর দিবস আজ

    সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্ক প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০২:২৩ পিএম

    আজ ১৭ রমজান, ঐতিহাসিক বদর দিবস। এ দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। মুসলিম ইতিহাসের প্রথম সশস্ত্র যুদ্ধ বদর। হিজরি দ্বিতীয় সনের ১৭ রমজান মদিনা থেকে প্রায় ৭০ মাইল দূরে বদর প্রান্তরে সংঘটিত হয়েছিল বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের লড়াই ‘বদরযুদ্ধ’। ইসলামের ইতিহাসে এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে এ যুদ্ধ।

    আল্লাহ সুবহানহু ওয়া তাআলার বিশেষ সাহায্যে দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমজান মদিনা থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে ঐতিহাসিক বদর প্রান্তরে সত্য-মিথ্যার পার্থক্য নিরূপণকারী এ যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। আর তাতে ইসলাম ও মুসলমানদের বিজয় অর্জিত হয়। এটি ইসলামের ইতিহাসে বদরযুদ্ধ হিসেবে পরিচিত।

    এ যুদ্ধে মানুষের সব ধারণা নাকচ করে দিয়ে প্রায় উপকরণহীন মুষ্টিমেয় দলটিকে জয়ী করেন মহান রাব্বুল আলামিন। সত্য-মিথ্যার চিরন্তন দ্বন্দ্বের ইতিহাসে সংযোজিত হয় নতুন অধ্যায়। তাই শুধু ইসলামের ইতিহাসে নয়, বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাসে এ দিনটি অনন্য অবস্থান দখল করে রেখেছে।

    ইসলামের ইতিহাসে বদর যুদ্ধের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সীমাহীন। ১৭ রমজানের এ প্রেক্ষাপট ইসলামে বিশেষভাবে সংরক্ষিত। এ দিন ৩১৩ জন সাহাবিকে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নেতৃত্বে তৎকালীন সময়ের আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত মক্কার কাফের-মুশরিকদের সঙ্গে বদর প্রান্তরে সংঘটিত হয়েছিল রক্তক্ষয়ী বদর যুদ্ধ। মুসলমানদের মহান আল্লাহ সুবহানহু ওয়া তাআলার এ যুদ্ধে ফেরেশতাদের মাধ্যমে বিশেষভাবে সাহায্য করে ঐতিহাসিক বিজয় দান করেছিলেন।

    তাওহিদ তথা একত্ববাদের বার্তাবাহক মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ইসলাম এবং মুসলমানদের জন্য এটি ছিল প্রথম বড় সামরিক যুদ্ধ। এই যুদ্ধের আগে মুসলমান ও মুশরিকদে মধ্যে বেশ কয়েকটি খণ্ডযুদ্ধ হলেও বদরের যুদ্ধ ছিল দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম বড় যুদ্ধ। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী বিজয় লাভ করে। ফলে ইসলাম প্রতিষ্ঠা ও মদিনা রাষ্ট্রে ভিত্তি তৈরিতে এ যুদ্ধে বিজয় বিশেষ ভূমিকা রাখে।

    মুসলিম বাহিনী প্রতিকূল পরিস্থিতি ও অবস্থানে থেকে বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বদর যুদ্ধের সময় মুসলিম বাহিনী যে প্রান্তরের অবস্থান নিয়েছিলেন, সে স্থানটিতে সূর্যের তেজ সরাসারি তাদের মুখের ওপর পড়ে। আর কাফেরদের মুখে দিনের বেলায় সূর্যের আলো পড়ে না। আবার মুসলমানরা যেখানে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করে, সেখানে বালুময় মাটি, যা যুদ্ধক্ষেত্রের জন্য উপযুক্ত নয়। অপরদিকে কাফেররা যেখানে অবস্থান নিয়েছিল, সেখানে মাটি শক্ত এবং যুদ্ধের জন্য স্থানটি উপযুক্ত। এত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মহান আল্লাহ মুসলিম বাহিনীকে বিজয় দান করেন। এটি ইসলামের অনেক বড় বিজয়েরই নামান্তর।

    ইসলামের বিরুদ্ধে বিশাল সৈন্য বাহিনীর মোকাবিলায় ঈমানদারদের ছোট একটি দলের সম্মুখ সংগ্রাম ছিল এটি। ঐতিহাসিক এ যুদ্ধে অবিশ্বাসীদের নেতা আবু জেহেলের নেতৃত্বে ছিল এক হাজার প্রশিক্ষিত সৈন্যের সুসজ্জিত বাহিনী। এ যুদ্ধে মানুষের ধারণাপ্রসূত সব রকমের চিন্তা ও উপলব্ধির বাইরে গিয়ে আল্লাহ তাআলা অস্ত্রহীন ঈমানদারদের অতিক্ষুদ্র দলটিকে বিজয় দান করেন।

    সেদিন ইসলামে দীক্ষিত নব মুসলিমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করেছিল, জয়-পরাজয় আল্লাহর হাতে। আবার সম্মান অপমানও আল্লাহর হাতে। সেদিন বদরের প্রান্তরে ঈমান ও কুফর, ন্যায় ও অন্যায়ের এক অন্যরকম ইতিহাস রচিত হয়েছিল। যা যুগ যুগ পর্যন্ত এক আল্লাহতে বিশ্বাসী মুসলমানদের জন্য প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

    বদর প্রান্তরে এক আল্লাহর প্রতি একান্ত আস্থা ও বিশ্বাস রেখেই মুসলিম বাহিনী যুদ্ধ করেছিলেন। শান্তি ও নিরাপত্তা বীজ বপন করেছিলেন। সংখ্যা, সরঞ্জাম ও সম্পদ কম থাকার পরও মহান আল্লাহ দান করেছিলেন এক সুস্পষ্ট বিজয়।

    ঐতিহাসিক তথ্য মতে, ১৬ রমজান মাগরিবের পর তারিখ পরিবর্তন হয়ে ১৭ রমজান শুরু হলো। সেই রাতে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর সাহাবিরা বদর প্রান্তের তাঁবুতে অবস্থান করছিলেন। অপরদিকে কাফেররাও তাদের ক্যাম্পে অবস্থান করছিল।

    ১৭ রমজানের বিশেষ এই রাতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশেষ দোয়া করেছিলেন। ইসলামের বিজয়ে জন্য কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করেছিলেন এভাবে- ‘হে আল্লাহ! আগামীকালের (সত্য-মিথ্যার) নীতিনির্ধারণী যুদ্ধে তোমার সাহায্য আমাদের অতি প্রয়োজন। এ যুদ্ধে আমরা তোমার সাহায্য ছাড়া বিজয় লাভ করতে পারব না। আর আমরা যদি পরাজিত হই তাহলে তোমাকে সেজদা করার কিংবা তোমার নাম ধরে ডাকার লোক এ পৃথিবীতে আর নাও থাকতে পারে। অতপর তুমিই সিদ্ধান্ত গ্রহণ কর, তুমি কী করবে। কারণ, তুমিই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মালিক। আমরা আমাদের জীবন দিয়ে প্রাণপণ যুদ্ধ চালিয়ে যাবো। আমরা আমাদের জীবন তোমার পথে উৎসর্গ করলাম। বিনিময়ে তোমার দ্বীনকে আমরা তোমার জমিনে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তুমি আমাদেরকে বিজয় দান করো। আমরা তোমার কাছে সাহায্য চাই।’ (যুরকানি, সিরাতে ইবনে হিশাম)

    আল্লাহ তাআলা নব মুসলিম ও নতুন রাষ্ট্রে দান করলেন বিজয়। নিরস্ত্র মুসলিমরা অস্ত্রে সজ্জিত বাহিনীকে পরাজিত করলেন। এ যুদ্ধে কাফেরদের পক্ষে নিহত হলো ৭০ জন। বন্দি হয় আরও ৭০ জন। আর মুসলমানদের মধ্যে চৌদ্দজন সাহাবি শহীদ হন।

    ঐতিহাসিক বদর প্রান্তরে মুসলিমদের জন্য ছিল অভাবনীয় বিজয়। মহান আল্লাহর একান্ত কুদরতের প্রমাণ। তিনি অল্প সংখ্যক লোক দিয়েও বিজয় দান করেন। তাতে সূচনা হয়েছিল ইসলাম বিজয়। তাই প্রতি বছর ১৭ রমজান বিশ্বব্যাপী পালিত হয় ঐতিহাসিক ‘বদর দিবস’।

    বদর দিবসে মহান আল্লাহ মুসলিম উম্মাহকে দান করুন মুসলমানদের বিজয়। সব নিয়ামত, মাগফেরাত ও নাজাতে ভরে ওঠুক রোজাদারের আমল ও মন। বদর যুদ্ধের বিজয় হয়ে থাকুক সব বিপদে মুমিন মুসলমানের অনুপ্রেরণা। আল্লাহ তাআলা বদর যুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী সাহাবাদের দান করুন জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা, সম্মান ও শান্তি। আমিন।

    এসআর

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    Loading…