গাজীপুরের টঙ্গীতে চাঁদার দাবির অভিযোগে খেয়াঘাট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুর আনুমানিক ১ টার দিকে টঙ্গী বাজার খেয়াঘাটে এ ঘটনা ঘটে।
খেয়াঘাটের ট্রলারচালক পারভেজ বলেন, দুপুরে হঠাৎ করে ১৫০-২০০ জন লোক এসে কাউকে কিছু না বলেই খেয়াঘাটে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তারা খেয়াঘাটের টিকেট কাউন্টারও ভাঙ্গচুর করে পানিতে ফেলে দেয়। তাছাড়া কয়েকজনকে মারধরসহ নানা হুমকি প্রদান করে।
টঙ্গী বাজার খেয়া ঘাটের ইজারাদার টুটুল সরকার জানান, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ সুনামের সাথে খেয়াঘাট পরিচালনা করে জনগনকে সেবা দিয়ে আসছি। কয়েকমাস যাবৎ টঙ্গী বাজারের বিএনপি নামধারী কিছু চিহ্নিত চাঁদাবাজ আমার কাছে প্রতিমাসে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলো। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজকে দুপুরে চাঁদাদাবি করা ব্যক্তিদের মধ্যে শিশির সরকার, টঙ্গী মাজার বস্তির ডুবলী, বিএনপি নেতা মিন্টু ও বাহারের নেতৃত্বে খেয়াঘাটে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায় এবং ঘাটের টিকেট কাউন্টার, নৌকা, ট্রলার ভাঙচুর করে এবং কয়েকজন মাঝি কে মারধর করে খেয়াঘাট বন্ধ রাখাসহ নানা হুমকি দিয়ে চলে যায়। হামলার পর থেকেই মাঝিদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই মাঝিরা নৌকা চলাচল বন্ধ রেখেছে।
তিনি আরোও জানান, খেয়াঘাটে হামলার ঘটনার সাথে সাথে আমি জাতীয় জরুরী সেবা (৯৯৯) এর মাধ্যমে টঙ্গী পূর্ব থানায় যোগাযোগ করি কিন্তু তারপরেও আমি আইনগত কোনো সহযোগী পাইনি। ঘটনার ৩ ঘন্টা পর থানা থেকে একজন উপ পরিদর্শক এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দেয়ার কথা বলে চলে যান।
টুটুল সরকার আরোও জানান, একজন ইজারাদার হিসেবে আমার যতটুকু আইনি সহযোগীতা পাওয়ার কথা ছিলো তা আমি পাইনি। আমি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং সন্ত্রাসীদের উপযুক্ত বিচার দাবি করছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিশির সরকারের মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি জানান, আমরা কোনো চাঁদাবাজী কিংবা খেয়াঘাট বন্ধ করার জন্য যাইনি। মূলত টুটুল সরকার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের অর্থ যোগানদাতা তাছাড়াও তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ একাধিক ছাত্র হত্যা মামলা রয়েছে। এই খেয়াঘাটে চাঁদাবাজীর অভিযোগে কিছুদিন পূর্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাকে গ্রেফতার করেছিল।
এছাড়াও খেয়া ঘাটে একাধিক দোকান বসিয়ে সেইসব দোকান থেকে প্রতিদিন ২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করেন তিনি। নৌপাড়াপাড়ে ইজারার নামে কয়েক গুণ বেশি টাকা উত্তোলন করেন। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় লোকজন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিছু নেতৃবৃন্দসহ খেয়াঘাটে অবৈধভাবে গড়ে তোলা আওয়ামী লীগের চেকপোস্ট হিসেবে ব্যবহৃত একটি টং দোকান ভেঙে দেওয়া হয় এছাড়াও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিষেধাজ্ঞা করা হয়। এর বাহিরে আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, খেয়া ঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় সংক্রান্ত একটি বিষয়ে স্থানীয় জনগণ সহ একটি বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে বলে আমি শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে তবে এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসআর