দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ দাবানল নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। গত সপ্তাহান্তে শুরু হওয়া দুই ডজনেরও বেশি দাবানলে চারজনের মৃত্যু হয়েছে এবং কয়েক হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৩ মার্চ) রাত পর্যন্ত পাঁচটি এলাকায় আগুন নেভানোর কাজে প্রায় নয় হাজার দমকলকর্মী, পুলিশ ও সরকারি কর্মচারী নিয়োজিত ছিলেন। এ ছাড়া ব্যবহার করা হয়েছে ১২০ হেলিকপ্টার। সোমবার সকাল নাগাদ বেশিরভাগ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও এখনো চারটি দাবানল জ্বলছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রথম দাবানলটি গত শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে দক্ষিণ গিয়ংসাং প্রদেশের সানচেয়ং এলাকায় শুরু হয়। একটি লন মোয়ার (ঘাস কাটার যন্ত্র) থেকে স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়লে আগুন লেগে যায় এবং তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
এই দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতে গিয়ে চারজন সরকারি কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ। সোমবার সকাল পর্যন্ত এই দাবানল পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি এবং এরই মধ্যে ১ হাজার ৪৬৪ হেক্টর (৩ হাজার ৬০০ একরের বেশি) এলাকা পুড়ে গেছে।
শনিবার উত্তর গিয়ংসাং প্রদেশের ইউইসিয়ং, উলসান শহরের উলজু এবং দক্ষিণ গিয়ংসাং প্রদেশের গিমহায়ে নতুন দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। দক্ষিণ গিয়ংসাংয়ের আগুন সোমবারও সক্রিয় রয়েছে।
দাবানলের কারণে এরই মধ্যে অন্তত ২ হাজার ৭৪০ জন বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। আগুনে অন্তত ১৬২টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ইউইসিয়ংয়ের একটি মন্দিরও রয়েছে।
গত শনিবার দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী চোই সাং-মক বন বিভাগকে দাবানল নিয়ন্ত্রণ ও দমকলকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানোর নির্দেশ দেন।
দেশটির সরকার উলসান শহর, দক্ষিণ ও উত্তর গিয়ংসাং প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে প্রায়ই দাবানল ঘটে থাকে।
এবি