সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত বাস সেবা দীর্ঘদিন ধরে আশ্বাসের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সমস্যা প্রকট হয়ে উঠলেও প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগের অভাবে সমস্যার সমাধান হয়নি।
একদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃপক্ষ ২০২৪ এর জুনে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সোয়া কোটির অধিক মূল্যের দুটি আশোক লেল্যান্ডের ৫২ আসন বিশিষ্ট শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নতুন বাসের ব্যবস্থা করতে পারলেও শিক্ষার্থীদের জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বাস সেবা এখনো বাস্তবে রূপ নেয়নি। উপাচার্যের আশ্বাসের পর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি নেই।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দিন দিন তীব্র হচ্ছে। তাদের অভিযোগ, প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে ও ফিরে যেতে প্রচণ্ড ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। গণপরিবহনে জায়গা না পেয়ে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হয়, যা ক্লাস ও অন্যান্য শিক্ষাক্রমে অংশগ্রহণে বাধার সৃষ্টি করছে।
প্রশাসনিক তথ্যমতে ২০২২ সালের অক্টোবরে মানিকগঞ্জ ও চন্দ্রা রুটে দুটি বাস চালুর সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আগ্রহীদের থেকে তথ্য আহ্বান করা হয়। প্রশাসনের দাবি পর পর দুইবার নোটিশ প্রদানের পরও শিক্ষার্থীদের থেকে পর্যাপ্ত সাড়া না পাওয়ায় বাসের ব্যবস্থা হয়নি।
এদিকে দীর্ঘদিনের ক্ষোভে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। সর্বশেষ, রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী নাসিম প্রশাসনকে ৩০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, “শিক্ষার্থীদের জন্য আগামী ৩০ দিনের মধ্যে বাস সার্ভিস চালু করতে হবে। যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে তালবাহানা করে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ৩০ দিন পর শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।”একই পোস্টকে সমর্থন করে একাধিক শিক্ষার্থীরা দ্রুত বাস সার্ভিস চালুর ব্যাপারে তাগদা দিয়েছেন।
আক্ষেপের সুরেই ভেটেরিনারি অনুষদ শিক্ষার্থী মো সজীব হোসেন জানিয়েছেন,"বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতে দুর্ভোগ যেন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। আমাদের জন্য নিজস্ব কোনো বাস বরাদ্দ না থাকায় প্রতিদিনই দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সকাল-বিকেলে রাস্তায় প্রচণ্ড ভিড় থাকে, অনেক সময় ঠিকমতো ক্লাসে পৌঁছানো যায় না।"
তিনি আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার শিক্ষার্থীদের সাথে লোকাল বাসের ঝামেলা হয় ঘটে চলন্ত বাস থেকে শিক্ষার্থী ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনাও।তার পরেও প্রশাসন তাদের আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ । জানিনা আমরা শিক্ষার্থীরা আর কতো সমস্যার সম্মুখীন হলে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ তাদের আশ্বাসের বাস্তবায়ন ঘটাবে। আমাদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম নিশ্চিত করতে প্রশাসন দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো.আবুল হোসেন বলেন, ইতিপূর্বে বাসের কাজের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হলেও প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ না হওয়ায় তা বাতিল করা হয়। তবে দুই-এক দিনের মধ্যেই নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করা হবে। বাসের কাজ সম্পন্ন হলে এগুলো চন্দ্রা ও মানিকগঞ্জ রুটে জন্য চালু করা হবে।
এসআর