মৌলভীবাজারের জুড়ীতে দুর্বৃত্তরা একটি বাড়িতে দরজা ভেঙে ঢুকে কাতার প্রবাসীসহ একই পরিবারের ৪ সদস্যকে কুপিয়ে জখম করেছে। এ সময় তারা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) গভীর রাতে উপজেলার পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের হালগরা এলাকায় ঘটে। আশংকাজনক অবস্থায় আহত ব্যক্তিদের সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা হলেন, হালগরা এলাকার বাসিন্দা আবদুল মোতালিব ওরফে লিটন (৩৬), মোতালিবের স্ত্রী রোকসানা বেগম (৩০) ও ভাই আবদুল আজিজ ওরফে রিমন (২৬) ও এক শিশু। এর মধ্যে মোতালিব কাতারে থাকেন। ৩ মাসের ছুটি পেয়ে সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরেন।
পরিবারের সদস্যরা বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩ টার দিকে ৬ সদস্যের একদল দৃর্বৃত্ত মোতালিবদের বসতঘরের পিছনের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে। এর মধ্যে ১ জনের মুখোশ পরা ছিল। তাদের হাতে বিভিন্ন ধরনের দেশী- বিদেশি অস্ত্র ছিল। রমজান মাসের কারণে সাহরি খেতে পরিবারের কিছু সদস্য জেগে ছিলেন। একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা 'মামলার সাধ মিটাইমু' এ কথা বলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে মোতালিবকে কোপ দেয়। স্বামীকে রক্ষা করতে গেলে তারা রোকসানাকেও কুপিয়ে জখম করে। এ সময় 'আর মামলা করলে জানে শেষ করি দিমু' বলেও তারা হুমকি দেয়। এর পর পাশের কক্ষে গিয়ে আবদুল আজিজকেও কুপিয়ে আহত করে। পরে তারা বিভিন্ন কক্ষের আলমারি, ড্রয়ার ভেঙে নগদ প্রায় ২ লাখ টাকা, প্রায় ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, ৫ টি দামি মুঠোফোনের সেট ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কেনা নতুন কাপড়চোপড় লুট করে নিয়ে যায়। দুর্বৃত্তরা চলে যাওয়ার পর পরিবারের সদস্যদের চিৎকার, কান্নাকাটি শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে যান।
খবর পেয়ে কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসান ও জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম ভূঁইয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আহত ব্যক্তিদের প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে সিলেটে স্থানান্তর করা হয়।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের কর্মকর্তাদের সামনে আহত মোতালিবের মা হাসনা বেগম (৭০) বলেন, তাঁদের বাড়ির সামনের রাস্তা নিয়ে প্রতিবেশী আত্মীয় সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে মামলা-মোকাদ্দমাও হয়। সম্প্রতি সরকারি জরিপকারকের (সার্ভেয়ার) মাধ্যমে মাপজোখ করে রাস্তার মালিকানা তাঁরা পান। দুর্বৃত্তরা মামলার কথা উল্লেখ করায় এ ঘটনার পিছনে প্রতিপক্ষের যোগসাজশ থাকতে পারে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
জুড়ী থানার ওসি মোরশেদুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। চিকিৎসা নিয়ে ফিরে আহত ব্যক্তিরা লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
এমআর