কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের পূর্ব উজানটিয়া রুপালী বাজার পাড়ায় ১১ একর লবণমাঠের বিরোধকে কেন্দ্র করে গুলিবর্ষণের ঘটনায় ১৪ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। এছাড়া মামলায় ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ মার্চ) রুপালী বাজার পাড়ার নুরুন্নবীর পুত্র মোহাম্মদ ইসমাঈল বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন, উজানটিয়া ইউপির মালেক পাড়ার মৃত ছাদেক আহমদের পুত্র মোহাম্মদ আবু (৩৫), মৃত আবুল কাসেমের পুত্র ফরহাদ ইকবাল (৪০), তার ভাই নেওয়াজ (৩৩), রিমন (৪৫), মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র সাইফুল ইসলাম (৪০), মৃত বন্দন আলীর পুত্র সুমন (৫০), আবু তাহেরের পুত্র মো. জায়েদ (৩৩), তার ভাই সায়েদ (৩৫), মৃত নুরুল হকের পুত্র লুৎফুর রহমান (৫৫), মৃত জাফর আলমের পুত্র জোমলাত (৪০), মৃত ছৈয়দ আহমদের পুত্র আরিফ আহমদ (৬০), মৃত আক্কাসের পুত্র মো. জাবেল (৪০), মৃত মনির আহমদের পুত্র আরফাত (৩৮) ও মৃত বাহাদুরের পুত্র নবাব শরীফ (৩০)।
জানা গেছে, গত ২৪ মার্চ সকালে ১১ একর লবণমাঠ দখলকে কেন্দ্র করে রুপালী বাজার পাড়ায় নিরস্ত্র নারী-পুরুষের ওপর অতর্কিত গুলি ছোঁড়ে প্রতিপক্ষের লোকজন। মালেক পাড়ার মোহাম্মদ আবু ও ফরহাদ ইকবালের নেতৃত্বে ওইদিন ২০-২৫ জন অস্ত্রধারী গুলি ছুড়তে ছুড়তে বাদীর বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এ সময় অস্ত্রধারীদের ছোড়া গুলিতে নারী-পুরুষসহ অন্তত ১৬ জন গুলিবিদ্ধ হন। এমনকি হামলাকারীরা একটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা অন্তত ১৫ রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
এদিকে, অস্ত্রধারীরা নিরস্ত্র লোকজনের ওপর গুলি চালানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন অস্ত্রধারী মুখে মাস্ক পরে বন্দুক দিয়ে একের পর এক গুলি ছুড়ছে। সংখ্যায় তারা ২০ থেকে ২৫ জন হবে।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি ওঠে। এরপর প্রশাসন অভিযানে নামে। মঙ্গলবার বিকেলে যৌথ বাহিনীর অভিযানে মালেক পাড়ায় সাইফুল ইসলামের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। মামলার ৪ নম্বর আসামি সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে পুলিশের এসআই সুনয়ন বড়ুয়া অস্ত্র আইনে পৃথক একটি মামলাও করেছেন।
তবে ঘটনার দুদিন পার হলেও এখনো কোনো আসামি গ্রেপ্তার কিংবা অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “যাদের হাতে অস্ত্র ছিল এবং যারা গুলি চালিয়েছে, তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।”
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা বলেন, আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করছি, শিগগিরই তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।
এসআর