লেডি শেনেট-আ। আনুমানিক তিন হাজার বছর আগে মিশরে বাস করতেন। উচ্চবংশীয় এই মিশরীয় নারীর মমি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে অবস্থিত ফিল্ড মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্টোরিতে সংরক্ষিত রয়েছে।
সম্প্রতি এই মিউজিয়ামে সংরক্ষিত ২৬টি মিশরীয় মমির সিটি স্ক্যান করিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এর মাধ্যমে মমি এবং মমিরা যেসব কফিনের ভেতরে রয়েছে সেসবের হাজারো এক্স-রে হাতে এসেছে তাদের। এসব এক্স-রের মাধ্যম ত্রিমাত্রিক ইমেজ তৈরি করে মমিগুলোর কঙ্কাল এবং কফিনের ভিতরে থাকা বিভিন্ন বস্তুর স্বরূপ উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
সে মমিগুলোর মধ্যে অন্যতম শেনেট-আ’র ব্যাপারে সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে বেশকিছু তথ্য জানতে পেরেছেন গবেষকরা। তারা জানান, উচ্চবংশীয় এই নারীর বয়স যখন ৩৫ থেকে ৪৫-এর মধ্যে, সেসময় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
তার শ্বাসনালীতে কিছু বস্তু রাখা হয়েছিল, যেন ঘাড় ভেঙে না পড়ে। একইসঙ্গে তার চোখের জায়গায় কৃত্রিম চোখ দেওয়া হয়েছিল, যেন ‘পরকালে’ চোখগুলো তার কাজে লাগে।
শেনেট-আ’র লাশকে প্রথমে খুবই দামি লিনেন কাপড়ে মোড়ানো হয়। পরে লাশটিকে একটি কার্টনের মতো সুসজ্জিত কফিনে পোরা হয়। তবে বিজ্ঞানীদের কাছে সবচেয়ে বড় রহস্য হয়ে ছিল যে, লাশটিকে কীভাবে কফিনে ঢোকানো হয়েছে। কারণ এতদিন কফিনের কোনো মুখ খুঁজে পাননি তারা, শুধু কফিনের পায়ের দিকে সামান্য একটু ফাঁকা ছিল, তবে সেটা দিয়ে লাশ কফিনে ঢোকানো মোটেই সম্ভব ছিল না।
সম্প্রতি সিটি স্ক্যানের পর বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, আসলে কফিনের উল্টো দিক দিয়ে লাশটিকে ভেতরে রাখা হয়। লাশ ভেতরে রাখার পর সেটাকে বাইরে দিয়ে সেলাই করে দেওয়া হয়। তবে সেলাইয়ের ওপর দিয়ে এমনভাবে প্লাস্টার করে দেওয়া হয়, যেন সেলাইয়ের বিষয়টি একেবারেই বুঝা না যায়।
বিজ্ঞানীরা মমিটিকে কফিনে ঢোকানোর পুরো প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করে বলেন, মমি এবং কফিনটিকে প্রথমে দাঁড় করানো হয়। পরে আর্দ্রতার মাধ্যমে কফিনটিকে নরম করা হয়, যেন মমিটিকে সহজে কফিনে প্রবেশ করানো যায়।
কফিনের পেছনের দিকটি সোজাসুজি কেটে মমিটিকে ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। এরপর কফিনের সে অংশটিকে সেলাই এবং পরবর্তীতে প্লাস্টার করে মমিটি সংরক্ষণ করা হয়।
তথ্যসূত্র: সিএনএন
এসএফ