যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার প্রশাসনের চার বছরের শাসনামল নিয়ে একটি বিদায়ী ভাষণ দিয়েছেন। গত সোমবার (১৩ জানুয়ারি) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে দেওয়া এ ভাষণে তিনি তার নানা পররাষ্ট্রনীতির সাফল্য তুলে ধরেন।
বাইডেন বলেন, আমরা একটি বাঁকবদলের মুহূর্তে রয়েছি। স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী যুগ শেষ হয়েছে। একটি নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই চার বছরে আমরা নানা সংকট মোকাবিলা করেছি এবং সেই পরীক্ষাগুলো পেরিয়ে এখন আরও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছি।
তবে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতি সমর্থন এবং আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারসহ বেশ কিছু বিষয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে বাইডেনের প্রশাসন। বিশেষ করে, গাজার যুদ্ধ চলাকালীন ইসরায়েলের কাছে রেকর্ড পরিমাণ সামরিক সহায়তা পাঠানো নিয়ে তার প্রশাসনের অবস্থান সমালোচিত হয়েছে।
গাজা যুদ্ধ ও যুদ্ধবিরতির আলোচনা নিয়ে বাইডেন বলেন, আমরা এমন একটি প্রস্তাবের দোরগোড়ায় রয়েছি, যা আমি মাসখানেক আগে উপস্থাপন করেছিলাম।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অন্তত ৪৬ হাজার ৫৮৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল।
বাইডেন জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে তিনি সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে কথা বলেছেন।
পররাষ্ট্রনীতি ও কূটনৈতিক সাফল্য
বাইডেন তার ভাষণে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অগ্রগতি, ইউক্রেনের জন্য ন্যাটোর সমর্থন এবং পরিবেশ সুরক্ষায় নেওয়া পদক্ষেপগুলোকে গুরুত্ব দেন। তিনি উল্লেখ করেন, আমার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করেছে এবং প্রতিপক্ষদের দুর্বল অবস্থানে ঠেলে দিয়েছে।
আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি দুই দশকের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে নতুন প্রজন্মের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ ও শক্তি সাশ্রয় করতে পেরেছি।
বাইডেন তার ভাষণে ট্রাম্প প্রশাসনের অতীতের নীতিগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, আমাদের এমন একটি পৃথিবীতে কাজ করতে হবে যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে অস্বীকার করা যায় না। কিছু লোকের কাছে এটি অবাস্তব মনে হতে পারে, কিন্তু তারা ভুল, একদম ভুল।
বাইডেন তার প্রশাসনের অর্জন তুলে ধরে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন আগের চেয়ে শক্তিশালী এবং আমাদের মিত্রদের অবস্থান আগের চেয়ে বেশি সুদৃঢ়। আমরা যুদ্ধ ছাড়াই এগুলো অর্জন করেছি।
আগামী ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এবি